Tuesday, January 04, 2011

আওয়ামী লীগের সাংসদের মদদে ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ

খুলনার দাকোপ উপজেলায় এক ভূমিহীন পরিবারের পাকা ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারটি অভিযোগ করেছে, ওই আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ননী গোপাল মণ্ডলের মদদে তার মামা দলীয় 'ক্যাডারদের' নিয়ে দুই দফায় ১৩ বিঘা জমির ধান কেটে নিয়ে গেছে।

পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা সহযোগিতা করেনি। পরিবারটির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। সংসদ সদস্য ননী গোপাল বলেছেন, এ বিষয়টি তিনি জানে না। ওই এলাকায় তার কোনো ক্যাডার নেই। তবে তার মামা বলেছেন, জমিটি তিনি ইজারা নিয়েছেন। সে সুবাদে তিনি জমির ধান কেটে নিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলার কৈলাসগঞ্জ ইউনিয়নের ধোপাদি গ্রামের ভূমিহীন পরিবারটি এই অভিযোগ করে। পরিবারটি জানায়, তারা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই জমি ও পুকুর ইজারা নিয়েছে। সংসদ সদস্য ননী গোপালের মামা শিবপদ মণ্ডল ওরফে শিব ডিলার জোর করে ধান কেটে নেওয়া ছাড়াও পুকুরের মাছ মেরে নিয়ে গেছে।

পরিবারের কর্তা তপন রায় অভিযোগ করেন, শিব ডিলার ক্ষমতাসীন দলের 'ক্যাডার' গণেশ চন্দ্র সরকার, গোকুল সরকার, মথুর সরকার, দুর্গাপদ সরকার, আবুল হাওলাদার, রফিক হাওলাদার, ফারুক মল্লিক, রশিদ হাওলাদার, হামিদ মল্লিক, ফরিদ মল্লিক, বায়েজিদ মল্লিক, বেল্লাল মল্লিক, এমাদুল হাওলাদার, সুকুমার বৈদ্য, জোগেশ চন্দ্র মৃধাসহ ২০-২৫ জনের একটি দলসহ লাঠিসোটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার জমির ধান কেটে নিয়ে গেছেন।

তিনি জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর সাত বিঘা এবং ২৯ ডিসেম্বর ছয় বিঘা জমির প্রায় ১৪০ মণ ধান কেটে নিয়ে গেছে তারা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা। তপন জানান, গত ২৮ ডিসেম্বর জেলা জজ জমির ওপর স্থিতিবস্থা জারি করলেও তারা তা মানেনি।

তিনি অভিযোগ করেন, শিব ডিলার ও তার লোকজন এখন তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ব্যাপারে খুলনার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট (এসপি) তানভীর হায়দার চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য স্থানীয় থানাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য ননী গোপাল বলেন, তার মামা আওয়ামী লীগ করেন। তিনি কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। সে কারণে একটি মহল তপন রায়কে দিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ওই এলাকায় তার কোনো লোক নেই দাবি করে সাংসদ বলেন, "এই কয় বিঘা জমির ধান কেটে নিয়ে আমার কি লাভ হবে।"

অভিযোগ অস্বীকার করে শিবপদ দাবি করেন, তপনের ইজারা ২/৩ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। এরপর তিনি পুকুরসহ এই জমি ইজারা নিয়েছেন। তিনি বলেন, এর আগেও তপনকে জমিতে চাষ দিতে নিষেধ করা হয়েছিলো। কিন্তু তিনি শোনেনি। তাই এবার তিনি ধান কেটে নিয়ে এসেছেন।

দাকোপ থানার ওসি এরশাদুল কবীর চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "পুলিশ কারো পক্ষ নিয়ে সহযোগিতা করেনি। যাদের ধান তারাই কেটে নিয়ে গেছে।"

No comments:

Post a Comment