Sunday, January 02, 2011

সরকারের মন্ত্রীরা কাজ জানেন না: খালেদা

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া মনে করেন, সরকারের মন্ত্রীরা কাজ জানেন না। [তারা] আইনও বোঝেন না। সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খালেদার দাবি, "প্রধানমন্ত্রী ও তার কয়েকজন উপদেষ্টা দেশ পরিচালনা করছেন।" তিনি সরকারকে দুই বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের কাছে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।
সংসদের ক্ষেত্রে বিরোধীদলীয় নেতা মনে করেন, "স্পিকার নিরপেক্ষ হতে চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী স্পিকারকে পরিচালনা করছেন।" "একইভাবে বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করে তিনি [প্রধানমন্ত্রী] প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়ে বসে আছেন," দাবি করে খালেদা বলেন, "কেবল তাই নয়, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের [উপাচার্যের] দায়িত্বও তিনি পালন করছেন। এভাবে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতার সব কিছু নিজের হাতে নিয়ে এক দলীয় বাকশাল কার্যকর করেছেন।" সংসদে বিরোধী দলকে কথা বলতে দেওয়া হয় না অভিযোগ করে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা বলেন, "সংসদে জনগণের কোনো কথা বলা যায় না। আমাদের সংসদ সদস্যরা যেসব মূলতবি প্রস্তাব আলোচনার জন্য দেন, তা গ্রহণ করা হয় না।

"একইভাবে সংসদের বাইরে সভা-সমাবেশ করে কথা বলতে চাইলে সেখানেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। পল্টন ময়দান, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের সমাবেশ করতে অনুমতি দেওয়া হয় না। অথচ আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে। সেখানে কোনো বাধা নেই।" বিএনপির সহযোগী ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চ প্রাঙ্গণে এক ছাত্রসমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন খালেদা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ওপর 'পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের' নিন্দা জানিয়ে দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা বলেন, "এভাবে নির্যাতন আমাদের দেশের লোকজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। অন্য কোনো দেশের লোক এটা করেছে।" শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে 'সরকারি দলের দখলবাজি, টেণ্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের চিত্র'ও সমাবেশে তুলে ধরেন খালেদা। তিনি কারাবন্দি ছাত্রদলসহ দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবি করেন।

সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেশবিরোধী সব চুক্তি করেছে বলেও দাবি করেন খালেদা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মেরও অভিযোগ করেন তিনি। ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিরোধীদলীয় নেতা ছাত্রদলের ওয়েব সাইটিি (.িঔপফথনহঢ়.ড়ৎম) ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে নির্মিত গানের একটি সিডি উদ্বোধন করেন খালেদা জিয়া।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, "সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ও ঐক্য ঠিক রাখা চাই। [কেউ] বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" ছাত্রদলের নতুন কমিটি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "প্রকৃত ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে কমিটি হতে হবে।"

এর আগে শুক্রবার রাত ১২টায় কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সিনিয়র সহসভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুলসহ ছাত্রনেতারা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া, সহসভাপতি আবদুল¬াহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, মীর নাসির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, মজিবর রহমান সারওয়ার, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, বিরোধী দলের প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ক ম গোলাম হোসেনসহ সাংসদ, কেন্দ্রীয় ও সাবেক ছাত্রদল নেতারা।

No comments:

Post a Comment