Thursday, January 20, 2011

ভারতে মন্ত্রিসভায় চমকহীন রদবদল

ভারতের মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল হয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বেশ কয়েকটি দপ্তর পুনর্বণ্টন করেছেন। তিনজন প্রতিমন্ত্রীকে মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছেন নতুন তিনজন।

তবে পুরনো মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েননি কেউ। গতকালই নয়াদিলি্লর রাষ্ট্রপতি ভবনে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল নতুন দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রীদের শপথ পড়ান।
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারের মন্ত্রিপরিষদে রদবদল হবে_কয়েক দিন ধরেই এমন কথা শোনা যাচ্ছিল। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ও মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজনের পদত্যাগের ফলে এ রদবদল অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। ২০০৯ সালের মে মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় এটিই প্রথম রদবদল। যদিও এতে অনেক মন্ত্রীর দায়িত্ব পরিবর্তন হলেও তেমন কোনো চমক ছিল না। তবে প্রত্যাশিতভাবেই একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর দায়িত্ব কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এবার স্বল্প পরিসরে রদবদল করা হলো। আগামী মার্চে বাজেট অধিবেশনের পর মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল করা হবে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুসারে সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রফুল প্যাটেল, শ্রীপ্রকাশ জয়সাল ও সালমান খুরশিদ মন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। এর মধ্যে প্যাটেল ভারী শিল্প ও সরকারি উদ্যোগ, জয়সাল কয়লা এবং খুরশিদ পানিসম্পদবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মন্ত্রিসভায় নতুন যুক্ত হওয়া বেনি প্রসাদ বার্মা ইস্পাত মন্ত্রণালয়ের (পূর্ণ দায়িত্ব), কে সি বেনুগোপাল বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের এবং অশ্বিনী কুমার পরিকল্পনা ও পার্লামেন্টবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। এ ছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী অজয় মাকেনকে যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং কে ভি থমাসকে ভোক্তা, খাদ্য ও সরকারি বণ্টনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ দায়িত্বে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।
যাঁদের দায়িত্ব কমল
শারদ পাওয়ারকে ভোক্তা, খাদ্য ও সরকারি বণ্টনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তিনি কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী থাকবেন। কপিল সিবালকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে শুধু টেলিযোগাযোগ ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে রাখা হয়েছে। বি কে হাণ্ডিককে খনিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে শুধু উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী করা হয়েছে। কুমারী শেলজাকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে গৃহায়ণ ও শহুরে দারিদ্র্য নিরসনবিষয়ক মন্ত্রী করা হয়েছে। এ ছাড়া পবন কুমার বানসালকে পানিসম্পদবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতি দিয়ে কেবল পার্লামেন্টারি কার্যক্রমবিষয়ক মন্ত্রী রাখা হয়েছে।
দায়িত্ব পুনর্বণ্টন
শহর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে জয়পাল রেড্ডিকে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসবিষয়ক, ইস্পাত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বীরভদ্র সিংকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগবিষয়ক, ভারী শিল্প ও সরকারি উদ্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে বিলাসরাও দেশমুখকে গ্রামীণ উন্নয়নবিষয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে এম এস গিলকে পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়নবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সি পি যোশীকে গ্রামীণ উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে সড়ক পরিবহন ও জনপথবিষয়ক মন্ত্রী করা হয়েছে। এ ছাড়া সুবোধ কান্ত সাহাকে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বেশ কয়েকজন প্রতিমন্ত্রীরও দায়িত্ব পুনর্বণ্টন করা হয় গতকাল। সূত্র : দ্য হিন্দু, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

No comments:

Post a Comment