Sunday, July 31, 2011

নিম্নমানের নির্মাণ কাজের দায় কার?

রিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা খোলা আকাশের নিচে পাঠগ্রহণ করছে, এমন সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়েছে শনিবার সমকালে 'খোলা আকাশের নিচে ক্লাস' শিরোনামে। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হয় এবং এ শিক্ষা পদ্ধতি বিশ্বে আদর্শ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থীও এ আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন এবং তারাও একে অনুকরণীয় বলে অভিহিত করে থাকেন। তবে শান্তিনিকেতনে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীরা ঠিক খোলা আকাশের নিচে নয়, বসে পড়ে গাছতলায়। ভাঙ্গার ধর্মদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের মিল ঠিক এখানেই। এখানেও শিক্ষার্থীদের মাথার ওপর গাছের পাতার ছায়া রয়েছে। তবে এ মিলের কারণ প্রকৃতির সানি্নধ্যে থেকে পড়াশোনা কিংবা রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা পদ্ধতি অনুসরণে আগ্রহ নয়। ১৯৯৪ সালে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়ের জন্য একটি একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। দেড় দশক অতিক্রম করতে করতেই ভবনটি প্রায় অকেজো হতে বসেছে। বছর তিনেক আগে দেয়াল ও ছাদে নানা ধরনের নির্মাণ ত্রুটি ধরা পড়ে এবং অবস্থা এমনই যে, এটি আর ব্যবহার করা যাবে বলে মনে হয় না। সময়মতো মেরামত কাজ সম্পন্ন হলে হয়তো কিছুদিন ব্যবহার করা যেত। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে ভবন-ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এ কারণেই শিক্ষার্থীরা গাছের নিচে ক্লাস নিতে বাধ্য হচ্ছে। তারা কখনও কখনও রোদে ঘর্মাক্ত হয়, বৃষ্টিতে ভিজে যায়। এতে তাদের পাঠগ্রহণের প্রতি অসীম আগ্রহ প্রমাণিত হয়। শিক্ষকদের ধৈর্যও প্রশংসা পেতে পারে। কিন্তু তাতে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের অপরাধ স্খলন হয় না। সরকারের সংশ্লিষ্ট যে বিভাগটি কাজ শেষে যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে ভবনটি বুঝে নিয়েছে তাদের দায়ও কম নয়। প্রকৃতপক্ষে দেশের নানা স্থানে এ ধরনের নিম্নমানের কাজের অভিযোগ রয়েছে। সব এলাকার খবর সংবাদপত্রে আসে না। যখন কোথাও দুর্ঘটনা ঘটে তখনই কেবল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ অনিয়ম বন্ধ করার কোনো উপায়ই কি সরকারের জানা নেই?

No comments:

Post a Comment