Thursday, June 28, 2012

কক্সবাজারে পাহাড় ধস ও বজ্রপাতে আরও ২০ জনের প্রাণহানি

টানা বৃষ্টিপাতের মধ্যে পাহাড় ধস, দেয়াল চাপা ও বজ্রপাতে কক্সবাজারে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ২৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া নৌকা ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও প্রায় ১২ জন।

জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাহাড় ধসে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় সাতজন, রামু উপজেলায় সাতজন, বজ্রপাতের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলায় দুইজন, পেকুয়া উপজেলায় দুইজন, কুতুবদিয়া উপজেলায় একজন ও বাড়ির দেয়াল চাপায় কক্সবাজার সদরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার দিনে পাহাড় ধসে মহেশখালী উপজেলায় মারা গেছেন চারজন, কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুলে একজন, চকরিয়া উপজেলায় একজন এবং পেকুয়া উপজেলায় মারা গেছেন একজন।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী মঙ্গলবার দিনে ও রাতে মোট ২৭ জনের লাশ উদ্ধারের ব্যাপারে নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ভারি বর্ষণের কারণে জেলায় পাহাড় ধস, বজ্রপাত, বাড়ির দেয়াল চাপায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাওয়া তথ্যমতে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টায় উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সোনাঘোনা পাড়ায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের চারজনসহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাত তিনটার দিকে রামু উপজেলার কাউয়ারকোপ ইউনিয়নের মধ্যম পাহাড়পাড়ায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই দুই এলাকায় স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়া বজ্রপাতের ঘটনায় কুতুবদিয়া উপজেলায় বড়ঘোপ ইউনিয়নের লাল ফকিরপাড়ার খুকি আখতার (১৫) নামের এক কিশোরী নিহত হয়েছে। একই সঙ্গে চকরিয়া উপজেলায় দুইজন, পেকুয়া উপজেলায় দুইজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হলেও এদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার রাত ১২টায় বাড়ির দেয়াল চাপায় কক্সবাজার সদরে ঈদগাঁও ইউনিয়নের দরগারপাড়া এলাকার আনোয়ারা বেগম (৫০) নামের এক নারী নিহত হয়েছে। আনোয়ারা বেগম ওই এলাকার মোহাম্মদ ইসলাম স্ত্রী।

অপরদিকে, রামু উপজেলার গর্জনীয়ার গর্জই খালে পারাপারের সময় নৌকা ডুবে ১২ নিখোঁজ রয়েছেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় সাগর এখনো উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত বলবৎ রাখতে বলা হয়েছে। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৩৭ মিলিমিটার।

অব্যাহত ভারি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক, চকরিয়া-মহেশখালী সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. জয়নুল বারী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুযোর্গ কবলিত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ, সেনাবাহিনী যৌথভাবে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঈদগাঁও ব্রিজ সংস্কার শুরু করেছে।

No comments:

Post a Comment