Thursday, June 28, 2012

বর্ষণ ও জোয়ারে প্লাবিত কুতুবদিয়া ক্রসড্যাম স্লুইস গেটের দাবি

১৯৯১ থেকে গত ২২ বছর বেড়িবাঁধের কোনো সংস্কার না হওয়ায় ওই ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে বিক্ষুব্ধ সাগরের জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ভাসছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া।

পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে এ উপজেলার প্রাণকেন্দ্রসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আর গৃহহারা হয়েছে বেড়িবাঁধের আশপাশের হাজার হাজার মানুষ। পানিবন্দি হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আউশ চাষের নতুন রোপা ও বীজতলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু ঘর-বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, মন্দির, মসজিদ ও পুকুরের মাছ। দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতিসহ হাজার হাজার মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউল করিম বলেন, পানি সরানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে জলাবদ্ধতা সহজে কাটবে না।
কৈয়ারবিলের পশ্চিমে বেড়িবাঁধের বাইরে পড়া হাজারো ভূমিহীন পরিবার জোয়ার ও বৃষ্টির অথৈ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ভঙ্গুর বেড়িবাঁধ, জলাবদ্ধতায় বসতঘর নষ্ট, আউশ ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য ইউএনওকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলে চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর জানান। দক্ষিণ ধূরুংয়ের অলিপাড়া, মদন্যা পাড়া, বাতিঘর পাড়া ও পশ্চিম আলী ফকির ডেইল এলাকার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে বহু ঘর-বাড়ি, ফসলের বীজতলা নষ্টসহ জলাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল-আজাদ। উত্তর ধূরুংয়ের নজুবাপের পাড়া ও ফয়জানির পাড়া এলাকার ভাঙা বাঁধ দিয়ে সাগরের পানি এবং ভারি বর্ষণে কাঁচা ঘর-বাড়ি নষ্টসহ জলাবদ্ধতার বর্ণনা দিয়েছেন চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহ। আলী আকবর ডেইলের কুমিরা ছড়া, তাবালেরচর ও তেলিপাড়া এলাকায় ঘর-বাড়ি নষ্ট, বেড়িবাঁধের ভঙ্গুর দশা ও জলাবদ্ধতার চিত্র তুলে ধরেন চেয়ারম্যান ফিরোজ খান চৌধুরী। বড়ঘোপের দক্ষিণ অমজাখালী এলাকায় অনবরত জোয়ারের পানি ঢুকছে, পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার কারণে উপজেলা প্রশাসনিক ভবন ও উত্তর বড়ঘোপের বিস্তীর্ণ এলাকার ঘর-বাড়িতে পানি ওঠার কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান শাকের উল্লাহ। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য দ্বীপ থেকে বইরের সঙ্গে যোগাযোগ কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে জরুরি খাদ্যসহ অন্যান্য মালামালের দাম বৃদ্ধি ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে ভোক্তাসাধারণ জানিয়েছেন।
দক্ষিণ ধূরুং ও লেমশীখালী ইউপি চেয়ারম্যান ক্রসড্যাম স্লুইস গেটে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে বলে দাবি করেন। জরুরি বাঁধসহ ক্ষতির শিকার লোকজনের পুনর্বাসনের দাবি করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ। প্রত্যন্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করে পানি সরানোর প্রচেষ্টাসহ জরুরি বেড়িবাঁধের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার কথা জানিয়েছেন ইউএনও মো. ফিরোজ আহমেদ। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে বর্ষার জন্য উত্তর ধূরুংসহ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরি বাঁধের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আ.শ.ম. শাহরিয়ার চৌধুরী।

No comments:

Post a Comment