Sunday, September 16, 2012

মহেশখালী দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় আদম পাচার

মহেশখালী দিয়ে সাগর পথে মালয়েশিয়ায় দেদার আদম পাচার করে চলেছে পাচারকারীরা। এরই মধ্যে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টকে নিরাপদ পাচারের স্থান হিসেবে ব্যবহার করছে একটি সিন্ডিকেট।
মহেশখালী পৌরসভার চরপাড়ার সিবিচ এলাকা, ঘোনাপাড়া, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের মুদিরছড়া, আহমদিয়া কাটা, কুতুবজোমের ঘটিভাঙ্গা, তাজিয়া কাটা, চরপাড়া, খোন্দকারপাড়া, শাপলাপুর ইউনিয়নের বারিয়াপাড়া ও জে এম ঘাট এলাকায় পাচারকারীরা সক্রিয় রয়েছে। মালয়েশিয়ায় আদম পাচারে মহেশখালীর নিরাপদ স্থান হিসেবে ঘটিভাঙ্গার পশ্চিমের প্যারাবন, বারিয়াপাড়ার সাম্পানঘাট, গোরকঘাটর সিবিচ সংলগ্ন নাজিরারটেক, আদিনাথ জেটি ও শাপলাপুরের জেম ঘাটকে নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে।
এলাকাবাসী জানায়, মহেশখালী পৌরসভার ঘোনাপাড়া গ্রামের কলেজ সড়কের মৃত জালাল আহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ, চরপাড়া এলাকার বার্মাইয়া হাজি রাহামত উল্লাহর জামাতা বেলালসহ বেশ কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেট মালয়েশিয়ায় আদম পাচার কাজে ব্যবহারের জন্য কার্গোট্রলার ক্রয় করে রমজানের আগে একটি আদম চালান সাগরপথে মালয়েশিয়ায় খালাস করে। তিন মাস আগেও মোহাম্মদ ঘোনাপাড়ায় এক ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার ছিলেন। হঠাৎ তিনি মুদির দোকান ছেড়ে দিয়ে মাসে কয়েকবার মিয়ানমার ও ঢাকা আসা-যাওয়া করেন। তার বাড়িতে দূর-দূরান্ত থেকে অচেনা লোকজন আসা-যাওয়া করে। একই সঙ্গে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ও অচেনা অসংখ্য নারী দেখা যায় তার বাসায়। মোহাম্মদের সঙ্গে চকরিয়া-কক্সবাজার ও ঢাকার একটি বড় সিন্ডিকেট জড়িত।
এ পাচারকারীর মাধ্যমে ঘোনাপাড়ার মৃত আবুল হোসেন ও মমতাজ বেগমের ছেলে প্রতিবেশী আবদুল গফুরকে ঈদের আগে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়। এখন তার কোনো হদিস পাচ্ছেন না বলে তার মেজ ভাই দুদু মিয়া জানান। ঈদের পরে ঘোনাপাড়া এলাকার কবির আহাম্মদের ছেলে ছৈয়দুল হক সিকদারকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে সম্প্রতি বাড়ি থেকে নিয়ে যান মোহাম্মদ। মালেশিয়ায় পাচার করা সদস্যদের অভিভাবকদের কাছ থেকে তিনি ৩ লাখ টাকা করে আদায় করে থাকেন। মালয়েশিয়া পাচার কাজের সহায়ক হিসেবে বঙ্গোপসাগরের অদূরে ট্রলি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
সূত্র জানায়, মোহাম্মদ অশিক্ষিত যুবক। তাকে পাচারকাজে সহায়তা করে আসছে বদিউদ্দিন, আজম, কলিম, শালু, রিপন, মৃদুল ও শিদুল নামের কয়েকজন। এভাবে অবৈধ পাচারের কারণে একদিকে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব, অন্যদিকে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সাগরে জীবন হারাচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে মহেশখালী থানার ওসি রনজিৎ কুমার বড়ূয়া বলেন, মহেশখালী দিয়ে সাগর পথে অনেক লোক মালয়েশিয়ায় পাচার হচ্ছে শুনেছি। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযান চালানো হবে।

No comments:

Post a Comment