Sunday, September 16, 2012

ফের ডাকঘরমুখী হচ্ছে সাধারণ মানুষ

মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের যুগে কেউ আর চিঠি লেখে না। চিঠিপত্রের তেমন আদান-প্রদান না থাকায় গ্রামের ডাকঘরগুলো ঝিমিয়ে পড়েছিল। ডাক পিয়ন বা পোস্টমাস্টারদেরও তেমন কাজ ছিল না; কিন্তু গ্রামের সেই পোস্ট অফিসগুলো এখন ফের সক্রিয়।
ডাক বিভাগ মোবাইল ফোন মেসেজের মাধ্যমে দ্রুত মানি অর্ডার সার্ভিস চালু করায় আবারও জমজমাট হয়ে উঠেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পোস্ট অফিসগুলো।
কক্সবাজার জেলা সদর ডাকঘরের নৈশ শাখার কর্মচারী অঞ্জলী দত্ত জানান, দ্রুত মানি অর্ডার সার্ভিসের কারণে দীর্ঘদিন পর পোস্ট অফিসে আবার কর্মব্যস্ততা ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ সরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে টাকা লেনদেনের এ সেবা খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। তিনি জানান, কক্সবাজার সদর পোস্ট অফিসের নৈশ শাখা থেকে গত মাসে মানি অর্ডারে পাঠানো প্রায় ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। একই সময় গ্রামের বিভিন্ন শাখায় মানি অর্ডার ইস্যু হয়েছে ১৫ লাখ টাকার। তিনি জানান, আগে পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের কার্যক্রম ছাড়া তেমন কাজ ছিল না। এখন মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে মানি অর্ডার সার্ভিস চালু হওয়ায় গ্রামের মানুষ উপকৃত হচ্ছে। গ্রামের ডাকঘরগুলো ফের সচল হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। পোস্ট অফিসের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও ফিরে এসেছে।
কক্সবাজারের সৈকত পোস্ট অফিসে টাকা পাঠাতে আসা বিজিবি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, ডাকঘরের মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদে টাকা পাঠানোর উদ্যোগ বর্তমান সরকারের ভালো একটি পদক্ষেপ। বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিসগুলো টাকা পাঠাতে অতিরিক্ত চার্জ নিচ্ছে। তারা যে সেবা দিচ্ছে সেটাও ভালো নয়। সেক্ষেত্রে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে অল্প খরচে দ্রুত টাকা পাঠানোর সেবা অত্যন্ত কার্যকর। সদর ডাকঘরের নৈশ শাখায় টাকা তুলতে আসা ঝিলংজার আলী আহমদ বলেন, বড় ভাই ঢাকা থেকে টাকা পাঠিয়েছেন, তা তুলতে এসেছি। গোপন পিন নম্বর বলার সঙ্গে সঙ্গে টাকা পেয়েছি। কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি।
কক্সবাজার সদর ডাকঘরের পোস্টমাস্টার ইমামউদ্দিন বলেন, লোকবল বৃদ্ধি পেলে সরকারি ডাকঘরের মানি অর্ডার সার্ভিস আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। তিনি জানান, কক্সবাজার জেলার আটটি উপজেলা পোস্ট অফিস ছাড়াও জেলার গ্রামীণ এলাকার মোট ১৩টি ডাকঘরে মানি অর্ডার সার্ভিসের এ সেবা চালু হয়েছে। প্রতি মাসে জেলায় প্রায় ৫ কোটি টাকার ওপর লেনদেন হচ্ছে।
তিনি জানান, পোস্ট অফিসে আগের সব সেবা যেমন_ চিঠিপত্র আদান-প্রদান, পণ্য পরিবহন, ডিপিএস ব্যাংকিংসহ প্রায় ৪০ ধরনের সেবা চালু আছে। তবে সাধারণ জনগণের হাতে মোবাইল ফোন পেঁৗছে যাওয়ায় চিঠির আদান-প্রদান কমে গেছে বলে তিনি জানান।

No comments:

Post a Comment