Saturday, December 04, 2010

কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা প্রশমনে চাই আলোচনা ও সমঝোতার উদ্যোগ

কোরীয় সংকট নিরসনে চীনের ছয় জাতির বৈঠক করার প্রস্তাবের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করিয়াছে। বিতর্কিত সমুদ্রসীমার কাছাকাছি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ছোট দ্বীপে ২৬ নভেম্বর উত্তর কোরিয়ার গোলা বর্ষণে ৪ ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর হইতে দেশ দুইটির মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাইতেছে। পীত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ নৌমহড়া চালানোর ঘটনা এই উত্তেজনায় যোগ করিয়াছে নতুন মাত্রা।
উত্তর কোরিয়ায় পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের ব্যাপারে চীনের ছয় জাতির আলোচনা প্রস্তাব নূতন নহে। উলেস্নখ্য, একই লক্ষ্যে ২০০৩ সালে শুরু হয় ছয় জাতি সম্মেলন। ৬ জাতিভুক্ত দেশগুলি হইল চীন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও উত্তর কোরিয়া। কিন্তু ২০০৬ সালে সমঝোতার সকল চেষ্টা ব্যর্থ হইয়া যায় উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাইলে। তখন উত্তর কোরিয়া ছয় জাতি আলোচনায় আর যাইবে না বলিয়াও ঘোষণা দিয়াছিল। তবে ২০০৭ সালে জ্বালানি সহায়তার বিনিময়ে উত্তর কোরিয়া তাহার পারমাণবিক কর্মসূচী বন্ধে সম্মত হইয়াছিল। বর্তমানে চীনের প্রস্তাবিত ৬ জাতি সম্মেলনে তাহাদের আপত্তি থাকিবার কথা নয়। আলোচনার টেবিলে দর কষাকষি ও জরুরি সহায়তার চাপ দিতেই তাহারা পারমাণবিক সক্ষমতা বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করিয়াছে বলিয়াছে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। পীত সাগরে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ নৌমহড়া এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বিষয়ে তথ্য প্রকাশের কূটনৈতিক তাৎপর্য যাহাই হউক, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে শান্তিপ্রিয় মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাইতেছে। এই পরিস্থিতির অবসান হওয়া দরকার।

এই ক্ষেত্রে পূর্ব এশিয়ার তিন জাতি, বিশেষ করিয়া উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র চীনের ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশিত। আমরা মনে করি, কোরীয় উত্তেজনা প্রশমনে দুই কোরিয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে হইবে। চীন যে ছয় জাতি বৈঠকের প্রস্তাব দিয়াছে, উহার অনুষ্ঠান ও সাফল্যের ব্যাপারেও সংশিস্নষ্ট সকল পক্ষের আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। ইরাক ও আফগানিস্তানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও অশান্তির পর, বিশ্ববাসী নূতন করিয়া যুদ্ধ দেখিতে চায় না। কাজেই দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার উত্তেজক সম্পর্ক এবং পারমাণবিক ইসু্যতে উত্তেজনা প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন শান্তিপূর্ণ পন্থায় সমস্যার সমাধানকে গুরুত্ব দিবে_ইহাই প্রত্যাশিত। আমরা মনে করি, তিক্ততা না বাড়াইয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে সমঝোতায় পেঁৗছিতে সংশিস্নষ্ট সকল পক্ষকেই আগাইয়া আসিতে হইবে।

No comments:

Post a Comment