Saturday, December 25, 2010

আজ শুভ বড়দিন

তিনি এসেছিলেন মুক্তির বারতা নিয়ে। এসে ছড়ালেন আলো। সত্য ও সুন্দরের পবিত্র-প্রভায় দীক্ষিত হলো অগুনতি আলোপিয়াসী। অনেক বছর আগে ছড়ানো আলোর পথ ধরে এখনো চলছে মুক্তি প্রার্থীদের পথচলা। তাদের বুকে পরম ভালোবাসায় বসবাস করছেন আলো ছড়ানো ঈশ্বরের প্রতিনিধি যিশু।

আজ বড়দিন। মুক্তির বারতা নিয়ে মানুষের কাছে আসা খ্রিস্ট ধর্মের প্রাণপুরুষ যিশুখ্রিস্টের শুভ জন্মতিথি সামনে রেখে এই দিনটি পালিত হবে। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব ঘিরে রাজধানীতে এখন অন্য রকম এক আমেজ। যিশুকে স্মরণ করতে ঘরে ও বাইরে এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রস্তুতিপর্ব। এই ধর্মে বিশ্বাসীদের ঘরে ও মনে বইছে আনন্দধারা। আজ তাদের প্রতিটি ঘর-মন স্নাত হবে আনন্দের ঝরনাধারায়।
বড়দিন সামনে রেখে দেশের সব গির্জা ও রাজধানীর বড় বড় হোটেল সাজানো হয়েছে রঙিন বাতি আর ফুল দিয়ে। বেথেলহেমের গরিব কাঠুরের গোয়াল ঘরেই জন্ম হয়েছিল যিশুর। এই আবহ সৃষ্টি করতে এই ধর্মে বিশ্বাসী অনেকের ঘরে বসানো হয়েছে প্রতীকী গোশালাও।
শুক্রবার রাতে প্রার্থনা সভার মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপন শুরু হবে। প্রার্থনার বিশেষ মাহাত্ম্য হচ্ছে, পৃথিবীতে যিশুর আগমন উপলব্ধি করা।
খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন নারীর প্রয়োজন ছিল। সেই নারীই কুমারী মেরি_মুসলমানদের কাছে যিনি পরিচিত বিবি মরিয়ম হিসেবেই। ধর্মবিশ্বাস বলে, 'ঈশ্বরের অনুগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতায়' মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূত গ্যাব্রিয়েলের (জিব্রাইল) কথা মতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস (যিশু)। ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে আবির্ভূত এ শিশুটিই বড় হয়ে প্রচার করেন খ্রিস্ট ধর্ম। ইসলাম ধর্মবিশ্বাসে তাঁকে বলা হয় হজরত ঈসা (আ.)।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের আর্চবিশপ হাউসে প্রধান আর্চবিশপ পৌলিনুস কস্তা কেক কেটে বড়দিন উৎসবের সূচনা করেন। সংবাদকর্মীদের সম্মানে আয়োজিত এ মিলনমেলায় পৌলিনুস কস্তা বলেন, 'বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে যাব_এটাই হোক আমাদের দীপ্ত শপথ।'
হোটেলে বিশেষ আয়োজন : বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, দি ওয়েস্টিন ঢাকা, র‌্যাডিসন ওয়াটার গার্ডেন, হোটেল শেরাটনসহ অন্যান্য হোটেল বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বড়দিনে এসব হোটেলে শিশুদের জন্য থাকবে ক্রিসমাস কিডস পার্টিসহ নানা ধরনের খেলার আয়োজন। প্রধান আকর্ষণ হিসেবে সান্তাক্লজ আসবেন নানা উপহার ও চমক নিয়ে।
বাণী ও শুভেচ্ছা : বড়দিন উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সব খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বাণীতে তিনি বলেছেন, 'সত্য, ন্যায় ও করুণার পথপ্রদর্শক মহান যিশুখ্রিস্ট এ দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। বিশ্বের সব খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীর কাছে তাই এ দিনটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। সব ধর্মের মর্মবাণী শান্তি ও মানবকল্যাণ। যুগে যুগে মহামানবগণ মানুষের সৎ পথে চলার দিশারী হয়েছিলেন। মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন ন্যায় ও কল্যাণের পথে চলতে। মহান যিশুখ্রিস্টও একইভাবে অনুসারীদের সৎকর্ম ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় উদ্বুদ্ধ করে গেছেন।
এ ছাড়া পৃথকভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তিন সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত বীরউত্তম, মি সিরিল সিকদার ও ঊষাতন তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল চন্দ্র ঘোষ, মহানগর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীরেশ চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল দেবনাথ এবং বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী।

No comments:

Post a Comment