Wednesday, January 19, 2011

পৌর নির্বাচন! পুরনো চেহারায় ভোট

নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরে ব্যাপক গোলযোগের মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ব্যাপক কারচুপি, কেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স ভাঙচুর, গুলিবর্ষণ, গাড়িতে আগুন, জাল ভোটের ঘটনা ঘটেছে এ তিন জেলার বিভিন্ন স্থানে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার নোয়াখালী ও ফেনীতে সকাল-সন্ধ্যা এবং লক্ষ্মীপুরে অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
নোয়াখালীতে ব্যালট বাক্স ছিনতাইসহ বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনায় ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া রিটার্নিং অফিসারের গাড়িসহ সাংবাদিকদের গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে এ জেলায়। বিভিন্ন ঘটনায় দুজন প্রার্থীসহ ২০ জন আহত হয়েছে। ফেনীর তিনটি পৌরসভায় সহিংসতা, জাল ভোট দেওয়া ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে ২২ জন। বাতিল হয়েছে দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। মহিপাল এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।
লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, কেন্দ্র দখল, মারধর এবং রামগতির একটি কেন্দ্রে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ভোটগ্রহণ চলাকালেই লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি লক্ষ্মীপুর ও রামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন বয়কট করে আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত হরতাল ডেকেছে। তারা ফলাফল বাতিল করে এ দুটি এলাকায় পুনর্নির্বাচন দাবি করেছে।
এর বাইরে চাঁদপুর, সাতকানিয়া, রাঙ্গুনিয়া, মিরসরাই, দাউদকান্দিসহ কয়েকটি পৌরসভায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ পৌরসভায়ই নির্বাচন হয়েছে শান্তিপূর্ণ।
নোয়াখালী : নিজস্ব প্রতিবেদক সামসুল হাসান মীরনের পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়Ñব্যালট বাক্স ছিনতাই, জাল ভোটসহ ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচন। রিটার্নিং অফিসারের গাড়িসহ তিনটি গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও আসবাবপত্র ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষুব্ধ বিএনপিকর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীসহ ২০ জন আহত হয়। নানা অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন ১৭টি কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করেছে। জেলা বিএনপি আজ বুধবার নোয়াখালীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে রিটার্নিং অফিসার ও তাঁর স্ত্রী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
সকাল ৮টা থেকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই চলছিল। ১১টার দিকে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে পুলিশ লাইন প্রাইমারি কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর মধ্যে বিরোধের জের ধরে এক প্রার্থী কেন্দ্রে ঢুকে ৪ নম্বর বুথের ব্যালট বাক্স নিয়ে পানিতে ফেলে দেন। এ সময় বেশ কিছু লোক ওই বুথের ব্যালট পেপারও ছিনিয়ে নেয়। পরে প্রিসাইডিং অফিসার পানি থেকে ভাঙা ও ভিজে যাওয়া ব্যালট বাক্স উদ্ধার করলেও ব্যালট পেপার উদ্ধার করতে পারেননি। এ সময় ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
মাইজদী অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ সময় বিএনপির কর্মীরা জাল ভোটের অভিযোগ এনে স্কুলসংলগ্ন একটি বাড়িতে হামলা চালায়। দুপুর ১২টায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মহিউদ্দিন আলমগীর ফকিরপুর মাদ্রাসা কেন্দ্রে এলে প্রতিপক্ষ নুরনবী সোহাগের লোকজন তাঁর ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে আহত করে। এ সময় তাঁর স্ত্রীও আহত হন। ওই কেন্দ্রে ব্যাপক জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুপুরে সোনাপুর ব্রাদার এন্দেজ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ সময় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী রাজু প্রতিপক্ষের হাতে আহত হন। এ ছাড়া বিক্ষুব্ধ লোকজন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। সকাল ১১টার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা জাল ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ এনে বিএনপির কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে তারা মাইজদী বাজারে রিটার্নিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাখাওয়াত হোসেনের গাড়িতে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর করে। একই সময় বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মাইজদী পাবলিক কলেজ কেন্দ্রের কাছে রাখা শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো জ ১৪-১৭৭৮) অগ্নিসংযোগ করে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়। তারা শহরের কল্যাণ স্কুলের কাছে দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান চৌধুরীর গাড়িসহ অন্য একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা শহরে লাঠি নিয়ে মিছিল করে জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
এ ছাড়া নোয়াখালী জেলার ৯টি ওয়ার্ডের ১৫টি কেন্দ্রে জাল ভোট, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় নির্বাচন কমিশন নোয়াখালী পৌরসভার ২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে মাইজদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, এমএ রশিদ উচ্চ বিদ্যালয়, প্রি-ক্যাডেট একাডেমী, মাইজদী পাবলিক কলেজ, আলফারুক একাডেমী, ফকিরপুর মাদ্রাসা, নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্রাদার এন্দেজ উচ্চ বিদ্যালয়, গোপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপাই মাদ্রাসা, প্রভাতি স্কুল, মাইজদী প্রভাতি স্কুল, দারুস্ সুন্নাহ আরাবিয়া মাদ্রাসা, মধ্যকরিমপুর বালিকা বিদ্যালয়, ইসলামিয়া আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে।
দুপুরে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহানের বাসভবনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হারুনুর রশিদ সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শিহাবউদ্দিন শাহীনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা তাঁর এজেন্টদের বের করে দেয়। তারা ভোটারদের হাত থেকে সিল ছিনিয়ে নিয়ে দলীয় প্রার্থীর প্রতীক আনারসে সিল মারে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত প্রার্থীর চাচাতো ভাই এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক শামিম নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে তাঁর ভোটারদের বের করে নিজের হাতে সিল মারেন বলে হারুনুর রশিদ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মো. শাহজাহান অবিলম্বে নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান। একই সঙ্গে নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতি’র প্রতিবাদে আজ বুধবার নোয়াখালীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়।
বিকেল ৪টায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী গোলাম মহিউদ্দিন লাতু সংবাদ সম্মেলনে জানান, নির্বাচনে ভোট গণনার সময় রিটার্নিং অফিসার ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামীমা সুলতানা বিএনপির পক্ষে কাজ করেছেন। লাতু অবিলম্বে রিটার্নিং অফিসার ও তাঁর স্ত্রীকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।
সেনবাগে নির্বাচন স্থগিত : বিভিন্ন অনিয়ম, জাল ভোট ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে নির্বাচন কমিশন সেনবাগ পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে। সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হলেও সকাল ১১টা থেকে সেনবাগ পাইলট স্কুল, কাদরা হামিদীয়া মাদ্রাসা, সেনবাগ সিনিয়র মাদ্রাসা, সেনবাগ কলেজ ও অষ্ট্রাদ্রোন প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় নির্বাচন কমিশন সেনবাগ পৌরসভার ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে। সেনবাগ পৌরসভা নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং অফিসার তোফায়েল হোসেন জানান, ভোটগ্রহণ নিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিকেল ৩টায় নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
নোয়াখালীর অপর পাঁচ পৌরসভা চৌমুহনী, চাটখিল, বসুরহাট, কবিরহাট ও হাতিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে।
ফেনী : কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক বিপ্লব রহমান ও ফেনী প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান দারার পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়Ñভোটকেন্দ্র দখল ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে গতকাল ফেনী জেলার সদর, পরশুরাম ও সোনাগাজী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, জাল ভোট দেওয়া, বহিরাগতদের ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার ছিনতাই, প্রিসাইডিং অফিসারকে মারধর, বোমাবাজি, ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও ভোটকেন্দ্র দখলের ঘটনায় ২০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ এক থেকে দুই ঘণ্টা স্থগিত থাকে। দুটি কেন্দ্রে ভোট বাতিল করা হয়। ব্যাপক জাল ভোটের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের সমর্থকরা মহিপালে প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বাকি কেন্দ্রগুলোতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
ফেনী পৌরসভার বারাহিপুর ও মধুপুর মালেক মিয়ার বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়। বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষে তিন পৌরসভায় ২০ থেকে ২২ জন আহত হয়েছে। দুপুরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মো. ফারুক হারুন ও স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল আবসার নির্বাচন বর্জন করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকার দলের সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্র দখল করে ব্যাপক জাল ভোট দিয়েছে।
নির্বাচন অফিস সূত্র ও ভোটাররা জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ফারুক হারুনের এজেন্ট রাসেল ভূঁইয়াকে (৩৫) মারধর করে বের করে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফেনী সদর পৌরসভার বালিকা বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে বহিরাগত যুবকরা ঢুকে প্রিসাইডিং অফিসার শাহ আলম পাটোয়ারীকে মারধর করে। খবর পেয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও বর্ডার গার্ড সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। একই সময় বারাহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুটি ব্যালট বাক্স ও বেশ কিছু ব্যালট পেপার ছিনতাই হলে জেলা রিটার্নিং অফিসার আলতাফ হোসেন চৌধুরী এ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করেন। সহদেবপুরের খায়রুল এছাক প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুজন কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আট থেকে ১০ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে সাইফুল ও সুমন নামে দুজনকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে সদরের ট্রাংক রোডের পাশে ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে ১৪-১৫টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। জিএ একাডেমী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রায় এক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।
এদিকে বিএনপি সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা নির্বাচনে জাল ভোট, কারচুপি ও গোলযোগের অভিযোগে দুপুর ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় অবরোধ গড়ে তোলে। এতে বিপুুলসংখ্যক দূরপাল্লার যানবাহন আটকে পড়ে। অবরোধকারীরা চার-পাঁচটি যানবাহনের কাচ ভাঙচুর করে। প্রায় এক ঘণ্টা পর জেলা পুলিশ সুপার মো. ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরশুরাম পৌরসভায় সেনা ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতেই বাঁশপদুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে দুই শতাধিক বহিরাগত যুবক কেন্দ্রের দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার সাদ আহমেদকে মারধর ও বেশ কিছু ব্যালট পেপার ছিনতাই করে। বহিরাগতদের হামলায় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নূরুল ইসলাম, মাইনুদ্দিন ভূঁইয়া সেলিম ও সামছুল হুদা আহত হন। এসব ঘটনায় ভোটগ্রহণ প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। বাইরে থেকে এসে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ ভোটাররা মেজবাহ ও সবুজ নামে দুই যুবককে ধরে পিটুনি দেয়। এ সময় ভোটাররা বিক্ষোভ মিছিল করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে ঘণ্টাখানেক পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
সোনাগাজীতে অজ্ঞাতপরিচয়ের সন্ত্রাসীরা সকাল থেকে বিভিন্ন গ্রামের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে বলে ভোটাররা অভিযোগ করেন। ফলে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। সেখানে ভোটকেন্দ্রে হামলার ঘটনায় পাঁচ-ছয়জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের আদালত এলাকায় প্রতিপক্ষের কর্মীদের হামলায় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সিরাজুল হক, কর্মী মাহফুজুল হক, ছাবের পাইলট হাই স্কুল কেন্দ্রে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আবু তাহেরসহ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগে ছাবের পাইলট হাই স্কুল কেন্দ্রে ৬৭টি ভোট ও প্রি-ক্যাডেট ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ১৫৭টি ভোট বাতিল করা হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. ইয়াকুব আলী মিয়া কালের কণ্ঠকে জানান, দু-একটি ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া সোনাগাজীতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
এদিকে ফেনী পৌর নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মো. ফারুক হারুন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আবসার নির্বাচন বর্জন করে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছেন।
জেলা রিটার্নিং অফিসার আলতাফ হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের কারণে দুটি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বালিকা বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের আহত হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
গতকাল সন্ধ্যায় এসএসকে রোডে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বুধবার ফেনীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেওয়া হয়। এতে লিখিত বক্তব্য দেন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন মিস্টার। পরে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করা হয়।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নিজাম হাজারী নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে দাবি করেন।
লক্ষ্মীপুর : কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক তৌফিক মারুফ ও লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি মীর ফরহাদ হোসেন সুমন জানান, এ জেলায় ভোট নিয়ে যেসব অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য প্রশাসনের নির্লিপ্ততা অনেকাংশে দায়ী। তবে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মো. জহুরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যেসব অভিযোগ শুনেছি, সবই তদন্ত করে দেখেছি। এগুলোর কোনোটিই ঠিক নয়। দু-এক জায়গায় কিছু বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাঠানো হলে সব ঠিক হয়ে যায়। এ ছাড়া রামগতির ঘটনা ঘটেছে কেন্দ্রের বাইরে, ভেতরে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।’
কুয়াশাঢাকা সকালে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে শুরু হয় লক্ষ্মীপুরের চার পৌরসভার ভোটগ্রহণ। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ্মীপুর শহরসহ অন্য নির্বাচনী এলাকার বেশির ভাগ কেন্দ্রের ভেতরে শুরু হয় বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম। কেন্দ্রের বাইরে সেনাবাহিনীর টহল চলাকালেও বেশির ভাগ কেন্দ্রে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সুযোগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আবু তাহেরের দেয়ালঘড়ি প্রতীকের ব্যাজধারী কর্মীদের বেপরোয়া বিচরণ শুরু হয়। এসব কর্মী কোনো কোনো কেন্দ্রে ঢুকে প্রকাশ্যেই দেয়ালঘড়ির ব্যালটে সিল মারতে বাধ্য করে ভোটারদের। বেশ কিছু কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতিতে প্রিসাইডিং অফিসার অসহায় হয়ে পড়েন। একজন প্রিসাইডিং অফিসার কালের কণ্ঠের কাছে অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের ভেতরের পরিবেশ সুন্দর করার জন্য প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়েও তিনি পাননি। রায়পুর ও রামগঞ্জেও কোনো কোনো কেন্দ্রে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ৯টায় লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের মাঠে ভোটারদের সারির ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায়, দেয়ালঘড়ির ব্যাজধারী কর্মীরা ভোটারদের ধরে ধরে কানে কানে কথা বলছেন। এখানে ১২টি বুথের মধ্যে অধিকাংশই ভোটারশূন্য অবস্থায় দেখা যায়।
৯টা ৫০ মিনিটে লক্ষ্মীপুর পাবলিক স্কুল কেন্দ্রে দেখা যায় নারী ভোটারদের ঠাসাঠাসি অবস্থান। এর মধ্যেই দেয়ালঘড়ির ব্যাজধারী পুরুষ কর্মীরা বেপরোয়াভাবে ঘুরে ঘুরে প্রকাশ্যেই তাদের মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করতে থাকে। এ সময় ওই কর্মীদের কয়েকজনকে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে অবস্থান করতে দেখা যায়।
দুপুর ১টায় দক্ষিণ বাঞ্ছানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৭ নম্বর বুথে ভোট চলাকালেই দেয়ালঘড়ির ব্যাজধারী তিন যুবক সেখানে ঢুকে প্রকাশ্যেই প্রথমে এক মহিলা ভোটারের হাত থেকে মেয়র পদপ্রার্থীর ব্যালট ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই ভোটার প্রতিবাদ জানালে এক যুবক তাঁকে গালাগাল করে। ওই যুবকরা মেয়র পদের ব্যালট ভোটারদের হাতে না দিয়ে তাদের দিয়ে দেওয়ার জন্য চিৎকার করে। এ সময় ওই বুথে উপস্থিত সংবাদকর্মীর দিকে চোখ পড়তেই যুবকদের একজন এগিয়ে এসে বিনয়ের ভঙ্গিতে বলে, ‘ভাই, মাফ করে দেবেন। অতীতে বিএনপির নির্যাতনে এলাকায় থাকতে পারিনি, তাই এবার জয় না পেলে রক্ষা নেই। এ জন্যই একটু চেষ্টা করছি।’ এ বিষয়ে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. আলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কোনো কথা না বলে অন্য দিকে হেঁটে যান।
দুপুর ২টায় লক্ষ্মীপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে পুরো মাঠ ও বুথের বারান্দাজুড়ে দেখা যায় দেয়ালঘড়ির ব্যাজধারীদের ছড়াছড়ি। বুথে ঢুকে ভোটারদের হাত থেকে মেয়র পদের ব্যালট নিয়ে সিল মারতেও দেখা যায় ওই ব্যাজধারী যুবকদের।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ হয়ে একটি বুথের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সাংবাদিকদের সামনেই প্রিসাইডিং অফিসার এ কে এম আব্দুর রাজ্জাকের কাছে অনুরোধ জানান। আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি দেখার জন্য তাঁর কক্ষে বিশ্রামরত লক্ষ্মীপুর সদর থানার এসআই প্রকাশ চন্দ্র সরকারকে বলেন। পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র এ সময় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খোলামেলা জায়গার কারণে চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি না।’
ভোটগ্রহণের শেষ পর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রামগতি পৌরসভার চরহাসান-হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে সেখানে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রুহুল আমিন, শাহীন, সেলিম ও আজাদ। এ ঘটনায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পরস্পরকে দায়ী করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।
দুপুর ১টায় লক্ষ্মীপুর সদর পৌরসভার বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী হাসানুজ্জামান চৌধুরী মিন্টু স্থানীয় বিএনপিদলীয় সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির লক্ষ্মীপুর শহরের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দেন। বিকেল ৩টার দিকে রামগঞ্জের মেয়র পদপ্রার্থী রোমান হোসেন পাটোয়ারীও নির্বাচন বয়কটের কথা জানান সাংবাদিকদের। বিকেল সাড়ে ৪টায় আরেক সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূইয়া এমপি অনিয়মসহ নানান অভিযোগে আজ লক্ষ্মীপুর জেলায় সকাল-দুপুর হরতাল ঘোষণা করেন।
আবু তাহের তাঁর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
চাঁদপুর : চাঁদপুরের ছেঙ্গারচর পৌরসভায় দুই মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সকাল ১১টায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী হাজি মো. বিল্লালের কর্মী-সমর্থকরা প্রায় সব ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোটদান এবং বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মারধরের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আমেনা বেগম। দুপুর পৌনে ১টার দিকে আমেনা বেগম মৌখিকভাবে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার মো. গোলাম কবির। সকাল সাড়ে ১১টায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছেঙ্গারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকরা জোরপূর্বক কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল দেওয়া শুরু করলে এ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করেন রিটার্নিং অফিসার।
কচুয়া পৌরসভায় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জয়নাল আবদীনের সমর্থক কয়েক যুবক সকাল ১১টার দিকে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বালিয়াতলী রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জোরপূর্বক ঢুকে সিল দেওয়া শুরু করে। এ সময় পোলিং অফিসাররা যুবকদের কাছ থেকে ব্যালট বই কেড়ে নিতে সক্ষম হন। পরে যুবকদের সিল দেওয়া ১১টি ব্যালট পেপার বাতিল করা হয়েছে বলে জানান ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার। তবে যুবকদের কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সাতকানিয়া : বিএনপি সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী হাজি মোহাম্মদুর রহমানের অভিযোগ, পৌরসভার আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢেমশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থকরা প্রিসাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে বাক্সবন্দি করেছে। তিনি ওই দুই কেন্দ্রের পুনর্নির্বাচন দাবি করেন। ঢেমশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপার লুটের চেষ্টা করেছিল, তবে তারা সফল হয়নি। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, পশ্চিম ঢেমশা ও ছমদরপাড়া কেন্দ্রে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের লাঞ্ছিত করেছে।
রাঙ্গুনিয়া : দক্ষিণ নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টির অভিযোগে আবু তাহের নামে একজন এবং জাকির হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাই হয়েছেÑএমন গুজব ছড়ানোর অভিযোগে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া এই দুই কেন্দ্র থেকে চার এজেন্টকে বহিষ্কার করা হয়।
মিরসরাই : মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভার কয়েকটি কেন্দ্রে বেশ কিছু জাল ভোট পড়ার খবর পাওয়া গেছে। বারইয়ারহাটের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার সময় নোমান নামের এক যুবককে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণ হয়েছে দাবি করা হলেও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের কিছু চিহ্নিত ভোটারকে কেন্দ্রে যাওয়ার পথে বাধা দিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন।
দাউদকান্দি : নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আলী আশরাফ, আলাউদ্দিন ভুঁইয়া ও জাকির হোসেন নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আশরাফকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড এবং আলাউদ্দিনকে ও জাকিরকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ ছাড়া হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, মতলব, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, মাটিরাঙা, পটিয়া, রাউজান, সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, ছাতক, দিরাই, কানাইঘাট ও চন্দনাইশ পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

No comments:

Post a Comment