Wednesday, January 19, 2011

সীমান্তে হত্যা বন্ধের উপায় খুঁজতে রাজি ভারত

বাংলাদেশ-ভারত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের প্রথম দিন সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে বিকল্প উপায় খুঁজতে ভারত রাজি হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বৈঠকে দুই পক্ষই সীমান্তে হত্যাকাণ্ডকে নিজেদের জন্য ‘বিব্রতকর’ বলে আখ্যায়িত করেছে। আজ বুধবার যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শেষে এ বিষয়ে যৌথ ঘোষণা দেওয়ার পর দুই দেশের স্বরাষ্ট্রসচিবদের নেতৃত্বে বৈঠক শুরু হবে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গতকাল বৈঠকের শুরুতেই নিরপরাধ ও নিরস্ত্র বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা সরকারের জন্য বিব্রতকর বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ তা বন্ধের দাবিতে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষও বাংলাদেশের আবেগ ও যুক্তি বুঝতে পেরে সীমান্তে গুলি করে হত্যা না করে বিকল্প অনুসন্ধানে সম্মত হয়। আর এ বিষয়গুলো ‘যৌথ আলোচনার দলিলে’ (জয়েন্ট রেকর্ডস অব ডিসকাশনস) তুলতেও রাজি হয়েছে ভারতীয় পক্ষ।
ঢাকায় শেরাটন হোটেলে গতকালের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক) ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উত্তর-পূর্ব) শম্ভু সিং।
সূত্র জানায়, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের এ বৈঠক থেকে পাওয়া ‘জয়েন্ট রেকর্ডস অব ডিসকাশনস’ অনুযায়ী আজ বিকেল ৩টায় একই স্থানে আবার বৈঠক হবে। তাতে সচিব পর্যায়ের বৈঠকের আলোচ্যসূচি নির্ধারিত হবে। সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান শিকদার। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন সে দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব জি কে পিল্লাই।
গতকাল বৈঠক শেষে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক) কামাল উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্ত, নিরাপত্তা ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়েই মূলত কথা হয়েছে। বৈঠকে সীমান্তে বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যার ঘটনায়
বাংলাদেশের কঠোর মনোভাবের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
জানা গেছে, কিশোরী ফেলানী হত্যার বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বৈঠকে তুলে ধরা হয়। এছাড়াও নিরস্ত্র ও নিরীহ বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করা বন্ধ করতে জোরালো যুক্তি ও দাবি উপস্থাপন করে বাংলাদেশ।
সীমান্তে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে প্রাণঘাতী নয় (নন লিথাল) এমন অস্ত্র দেওয়া যায় কি না, তাও ভেবে দেখতে রাজি হয়েছে ভারত। যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক) কামাল উদ্দিন আহমেদ একে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, ‘দণ্ডিত বন্দি বিনিময়, ফৌজদারি অপরাধ বিষয়ে আইনি সহায়তা এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, সংঘটিত অপরাধ ও অবৈধ মাদক চোরাচালান প্রতিরোধবিষয়ক তিনটি চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, শুধু অনুপ চেটিয়া নয়, দুই দেশেরই দণ্ডিত বন্দি নাগরিকদের বিনিময় নিয়ে কথা হয়েছে।
বাংলাদেশ আজকের বৈঠকগুলোতেও সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদ জানাবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এবং স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান শিকদার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
অধিকার : এদিকে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বেপরোয়া হত্যা বন্ধে শুধু প্রতিবাদ নয়, সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও বিচার দাবি প্রয়োজন।

No comments:

Post a Comment