Sunday, May 15, 2011

বুধবারের মধ্যে শপথ নেবেন মমতা

গামী বুধবারের আগেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের সঙ্গে দেখা করেন মমতা। আজ-কালের মধ্যে রাজ্যপাল মমতার দলকে শপথ নেওয়ার আহ্বান জানাতে পারেন।

তৃণমূলের একটি সূত্র জানায়, দিন চূড়ান্ত না হলেও আগামী ১৮ মে বুধবারই নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিতে পারে। ২০০১ ও ২০০৬ সালের ১৮ মে মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে তৃণমূলের অন্য একটি সূত্র বলেছে, বুধবারের আগেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন মমতা। একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অবস্থায় ১৫ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠিত হতে পারে। বামফ্রন্টের মন্ত্রিসভা ছিল ৪৪ সদস্যের।
এদিকে আজ রোববার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের নবনির্বাচিত বিধায়কদের বৈঠক বসার কথা। এই বৈঠকে মমতাকে বিধানসভার নেতা নির্বাচন করা হবে।
মন্ত্রিসভায় কংগ্রেসকে যোগদানের আমন্ত্রণ: তৃণমূল কংগ্রেস জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেসকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা। গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বৈঠকে মমতা এ আমন্ত্রণ জানান। মমতা আরও বলেন, ‘আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী আমাদের শপথ গ্রহণের দিন উপস্থিত থাকবেন। আমি প্রণবদার সঙ্গে নয়াদিল্লি যাব এবং তাঁদের আমন্ত্রণ জানাব।’ তবে মন্ত্রিসভায় কংগ্রেস যোগ দেবে কি না, তা এখনো দলটি নিশ্চিত করেনি।
মন্ত্রী হচ্ছেন যাঁরা: মমতা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা স্থান পাবেন। মন্ত্রী হতে পারেন বলে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন: অমিত মিত্র, মনীশ গুপ্ত, রবি রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, জাভেদ খান, ববি হাকিম, মদন মিত্র, সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার, সুদীপ্ত রায়, হায়দার আজিজ শফি, অশোক দেব, গৌতম দেব ও তাপস রায়।
এদিকে ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক ইকোনমিক টাইমস গতকাল বলেছে, মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে কি না, সে ব্যাপারে কোনো আভাস না পাওয়া গেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দফায় প্রায় ২৪ জন মন্ত্রী নিতে পারেন। নতুন মন্ত্রিসভায় দু-একজন নারীও থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে পত্রিকাটি। এ ক্ষেত্রে শশী পাঁজা ও স্বাতী খন্দকারের নাম শোনা যাচ্ছে। স্বাতী হুগলি থেকে নির্বাচিত প্রয়াত তৃণমূল সাংসদ আকবর খন্দকারের স্ত্রী। শশীও তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর তৃণমূলের রাজনীতিতে যোগ দেন।
ইকোনমিক টাইমস বলেছে, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সাধারণ সম্পাদক অমিত মিত্র এবং বিধানসভার সাবেক বিরোধী নেতা পার্থ চ্যাটার্জি উভয়েই মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর পেতে পারেন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়টি মমতা নিজের হাতে রাখতে পারেন। মন্ত্রিসভায় গৌতম দেবকে অন্তর্ভুক্ত করে মমতা উত্তর বাংলার জনগণকে সন্তুষ্ট করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মমতা ওই অঞ্চলে উন্নয়নমূলক কাজ শুরুর ইঙ্গিত দেবেন।
মুসলমানদের সন্তুষ্ট করতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকেও এক বা দুজন মন্ত্রী নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে মমতার। এ ক্ষেত্রে ববি হাকিমের নাম এখন সবার মুখে। নির্বাচনী প্রচারণায় মমতার খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা গেছে ববি হাকিমকে। তিনি কলকাতা বন্দর আসন থেকে জয়ী হয়েছেন।
৫৩ মুসলিম বিধায়ক: রাজ্যে এবার ৫৩ জন মুসলিম বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে ২২, কংগ্রেস থেকে ১৩ এবং বামফ্রন্ট থেকে ১৮ জন।
২৭ মন্ত্রী পরাজিত: মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যসহ ৩৫ জন মন্ত্রী নির্বাচনে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীসহ ২৭ জন পরাজিত হয়েছেন। জয়ী হয়েছেন আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, সূর্যকান্ত মিশ্র, আনিসুর রহমান, সুশান্ত ঘোষ, দশরথ তিরকে, দেব লীনা হেমব্রম, পরেশ অধিকারী ও সুভাস নস্কর।

No comments:

Post a Comment