Saturday, June 16, 2012

সীমান্ত এলাকায় অভিযোগঃ জামায়াত নেতারা রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন

বান্দরবান জেলার মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা একটি স্কুলে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা সন্তানদের ভর্তি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিভাবকরা বলছেন, দুজন জামায়াত নেতা সুপরিকল্পিতভাবে এ সুযোগ করে দেন। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক খাইরুল বাশার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উখিয়া উপজেলা শাখার সেক্রেটারি। সহকারী প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ শাহজাহান উখিয়া জামায়াতের আমির হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের সঙ্গে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ঘুংধুম হাই স্কুলটির অবস্থান। বাংলাদেশের স্কুলে রোহিঙ্গা শিশুদের ভর্তির অভিযোগটি বান্দরবানের জেলা প্রশাসন তদন্ত করছে। স্কুলটির পার্শ্ববর্তী তুমবুরু গ্রামের বাসিন্দা এবং স্কুলের অভিভাবক জাহাঙ্গীর আজিজ বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করেছেন, জামায়াতের ওই দুই নেতা উক্ত স্কুলের একজন দাতা সদস্যের সঙ্গে যোগসাজস করে রোহিঙ্গা শিশুদের স্কুলে ভর্তির সুযোগ করে দিচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকেই প্রকারান্তরে উৎসাহিত করছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, স্কুলটির সপ্তম শ্রেণীতে মোহাম্মদ শফিক (রোল নম্বর ২৭), মোহাম্মদ আয়াছ (রোল নম্বর ০৭), অষ্টম শ্রেণীতে মোহাম্মদ হারুন (রোল নম্বর ৪৫), আবছার (রোল নম্বর ০৫), হামিদ (রোল নম্বর ২১) এবং নবম শ্রেণীতে আবু তৈয়বসহ (রুল নম্বর ০৫) আরো অনেক রোহিঙ্গা কিশোরকে ভর্তি করা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে এই ভর্তির কাজ চলে। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীর মতে, রোহিঙ্গাদের অবাধে পড়ালেখার সুযোগ দিয়ে জামায়াতে ইসলামী অনুপ্রবেশকেই উৎসাহিত করছে।
জামায়াত নেতা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক দুজনের সঙ্গেই গতকাল শুক্রবার কথা হয়েছে কালের কণ্ঠের। রোহিঙ্গা কিশোরদের ভর্তির বিষয়টি দুজনেই অকপটে স্বীকার করেন। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, জন্মনিবন্ধন সনদে বাংলাদেশি নাগরিক দেখেই তাঁরা ভর্তি করেন। প্রধান শিক্ষক বলেন, 'আমরা তাদের জন্মনিবন্ধন দেখেই ভর্তি করিয়েছি।'
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ইন্ধন দিচ্ছে। এই ভর্তির বিষয়টিও জামায়াতের কর্মকাণ্ডের অংশ কি না_এ প্রশ্নের জবাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও জামায়াত নেতা খাইরুল বাশার বলেন, 'বিষয়টি এ রকম কিছুই নয়।'
প্রধান শিক্ষক বলেন, আগামী ২৪ জুন বান্দরবানের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্তে আসবেন। ভর্তি করানো শিশু-কিশোরদের জামায়াত নেতারা বাংলাদেশি বলে দাবি করলেও এলাকাবাসী বলছে, ওই ছাত্ররা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের সন্তান।

No comments:

Post a Comment