Saturday, June 16, 2012

টেকনাফ উপকূলের জেলেরা সাগরে যেতে পারছেনা

মিয়ানমারে রাখাইন ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্ট দাঙ্গার কারণে বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূলের জেলেরা গত এক সপ্তাহ ধরে বেকার হয়ে পড়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষেধের কারণে তারা সাগরে যেতে না পারায় প্রায় দেড় শতাধিক বোট বাংলাদেশের উপকূলে নোঙ্গর করে রেখেছে। ফলে মাছ ধরার প্রাণচাঞ্চল্য মৌসুমে জেলে পরিবারের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীরদ্বীপের বেশ কটি জেলে এলাকায় ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় জেলে হোছেন নূর জানান, এলাকার মৎস্যজীবীদের আহরিত মাছ বিক্রি করে শত শত পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সাগরে মাছ ধরতে বাধার কারণে তাদের পরিবারগুলো হতাশায় দিন কাটাচ্ছে।

সরেজমিনে আরো দেখা যায়, টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় ২৬টি, মেস্ত্রী পাড়া এলাকার ২০টি, ঘোলারপাড়া ঘাট এলাকায় ৫০টি জালিয়াপাড়া এলাকায় ১০০টি ফিশিং বোট (ট্রলার) ও কয়েক শতধাকি নৌকা সাগরে মাছ আহরণ করতে পারছে না। বাজারঘাট এলাকার জেলে মনির আহাম্মদ জানান, প্রতিটি ফিসিং বোটে গড়ে ১০ জন জেলে কাজ করে। বিনিময়ে দৈনিক ৩০০ টাকা হারে তারা বেতন পায়। কিন্তু কয়েকদির ধরে এসব জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছেন।  

নুরুল হোসেন, মো: আলমসহ বেশ কয়েকজন জেলে জানান, সম্প্রতি মিয়ানমারের দাঙ্গার কারণে বিজিবি তাদের ফিশিং বোটগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাগরে যেতে নিষেধ করেছে।

স্থানীয় সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল রহমান জানান, আমার ইউনিয়নে ৫৭ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। বর্তমানে তারা সাগরে যেতে না পারার কারণে জেলে পরিবারের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার সেলিম মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, “উপকূলের যেসব এলাকায় নৌকা ভেড়ানো যায় সে সব এলাকায় আপাতত তিন দিন জেলেদের মাছ ধরার নৌকা না নামাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সত্যতা স্বীকার করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন.ম নাজিম উদ্দিন বার্তা২৪ ডটনেট-কে বলেন, “জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে অনেক সময় জলসীমা অতিক্রম করে থাকতে পারে। এতে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী গোলা ছোঁড়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে নাফ নদীসহ আশপাশ এলাকার ফিশিং বোটগুলোকে মাছ ধরার ওপর নিষেধ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়টির কারণে জেলেদের নির্দিষ্ট সীমানা দিয়ে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শীতল করা হবে বলে তিনি জানান।

No comments:

Post a Comment