Thursday, February 10, 2011

বলয় রহস্য by জুবায়ের হোসেন

নির নাম শুনলেই মাথায় আসে গ্রহটাকে ঘিরে থাকা বলয়ের ছবি। সৌরজগতের বৃহস্পতি, ইউরেনাস ও নেপচুনেরও এমন বলয় আছে, তবে এরা শনির বলয়ের কাছে পাত্তা পায় না। কেননা শনির বলয়টা দৃশ্যমান ও দৃষ্টিনন্দন। কিন্তু এ সৌন্দর্যের পেছনের কাহিনী একেবারে নিষ্পাপ নয়। বলয় সৃষ্টির মূলে রয়েছে এক 'মহাজাগতিক হত্যাকাণ্ড'! মার্কিন গবেষকরা জানালেন, শনির এ বলয় তৈরির জন্য বহুকাল আগে ধ্বংস হয়েছিল অতিকায় এক উপগ্রহ।

এক সময় ভাবা হতো, শনি গ্রহের দুটি উপগ্রহ ধাক্কা লেগে কিংবা ধূমকেতুর আঘাতে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে ছড়িয়ে যায়। ধীরে ধীরে ওই কণাগুলো গ্রহটির চারদিকে জায়গা মতো জেঁকে বসে। তবে নাসার অভিযানে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত ভিন্ন ধারণার ইঙ্গিত দেয়। কেননা বলয়টির ৯৫ শতাংশই বরফ। যদি উপগ্রহের খণ্ডে বলয় তৈরি হতো তবে এতে বরফের সঙ্গে অনেক বেশি পাথরকণা থাকার কথা। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথওয়েস্ট গবেষণা সংস্থার তৈরি মডেল জানাল আরো চমকপ্রদ এ তথ্য। বলয় তৈরির সময় শনি সবে জমাট বাঁধতে শুর করেছিল। চারপাশ ঘিরে ছিল হাইড্রোজেন গ্যাসের মেঘ। এখনকার সবচেয়ে বড় চাঁদ টাইটানের চেয়েও বড় উপগ্রহ ছিল শনির। ভালোভাবে কক্ষপথে থিতু হওয়ার আগেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি খাটিয়ে একটু একটু করে ওই উপগ্রহের বায়ুমণ্ডল থেকে বরফ কেড়ে নেয় শনি। আর ওই বরফেই তৈরি হয়েছে বলয়। শুরুর দিকে বলয়টা ছিল এখনকার চেয়ে ১০-১০০ গুণ বেশি পুরু। পরে ওই বরফের বলয়ে মিশে গেছে যৎসামান্য পাথরখণ্ড ও ধূলিকণা। আর ভর কমে আসায় ওই উপগ্রহ প্রবল বেগে শনির গায়ে আছড়ে পড়ে চূর্ণ হয়ে যায়। গবেষণা বলছে, বলয়ের মধ্যে হারানো বরফ থেকে তৈরি হয়েছে আরো অনেক ক্ষুদে উপগ্রহ।

No comments:

Post a Comment