Wednesday, May 23, 2012

পেকুয়ায় বেকারত্ব বাড়ছে

কক্সবাজারের উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়ায় সরকারি-বেসরকারি কোনো কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র না থাকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে বেকারের সংখ্যা। কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাবে এখনকার শিক্ষিত বেকার যুবকরা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।

গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে পেকুয়া মডেল উপজেলায় বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে বলে সচেতন মহল অভিমত প্রকাশ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাভিত্তিক উৎপাদনশীল ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসারের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতে সরকার দেশে ১৯৯৯ সালে উপজেলা বিসিক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নীতিমালা প্রবর্তন করে। এ প্রকল্পের আওতায় ১০ শতাংশ সুদে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদানের নিয়ম হয় সে সময়। সারাদেশে প্রায় ৩৫ হাজার ৪৩৭ জনকে প্রশিক্ষণ এবং ৫৩ হাজার ১৮২ জন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাকে ঋণ সুবিধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রকল্প শুরু করার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মডেল উপজেলায় এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেনি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এর ফলে একটি স্বাবলম্বী উপজেলা হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পেকুয়া।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, ২০০১ সালে সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাউদ্দিন আহমদ বহু চেষ্টা করেও পেকুয়ায় বিসিক শিল্প প্রকল্প ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করতে পারেননি। বর্তমান সরকারের তিন বছর মেয়াদপূর্তি হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে না ওঠায় পেকুয়ার প্রায় ৪ লাখ মানুষের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, পেকুয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম পাহাড়িয়াখালীর রাখাইন সম্প্রদায় চাড়াই, পাটি, মোড়া, বেতের চেয়ার, কুলা ও নানা কুটিরশিল্প সামগ্রী তৈরি করে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারিভাবে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের নারী নেত্রী সা সুং প্রু বলেন, পেকুয়ায় কারিগরি শিল্প প্রতিষ্ঠানের অভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে পিছিয়ে পড়েছে অনেকে। অবিলম্বে এখানে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।
পেকুয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম উজানটিয়ার শিক্ষিত বেকার যুবক মোঃ শাহআলম বেপারী জানান, সরকারি মাধ্যম বা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারিগরী শিক্ষা লাভ করতে পারলে আমরা আর বেকার থাকতাম না।
এ বিষয়ে পেকুয়া-চকরিয়া সংরক্ষিত আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ সাফিয়া খাতুন বলেন, বর্তমান সরকার গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা ও জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি পেকুয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিসিক শিল্প প্রকল্প ও বেকার যুবকদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে সমস্যা দূর করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

No comments:

Post a Comment