Sunday, September 25, 2011

সংস্কারে দলগুলোর ব্যর্থতাই আমার মূল উদ্বেগঃ মইন

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ১৬ মাস পর হতাশা প্রকাশ করে তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ বলেছিলেন, এত দিন পরও নিজেদের সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ব্যর্থতাই’ তাঁর মূল উদ্বেগ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, দুর্নীতি ও অন্যান্য অভিযোগে ইতিমধ্যে আদালতে দোষী সাব্যস্ত ৫৪ জন নেতাকে দলগুলো কেন বহিষ্কার করছে না।
২০০৮ সালের ৬ মে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির সঙ্গে বৈঠকে সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদ এসব কথা বলেছিলেন বলে উইকিলিকসের ফাঁস করা তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে। ৭ মে ওয়াশিংটনে এ কূটনৈতিক তারবার্তাটি পাঠান রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি।

তারবার্তার ভাষ্যমতে, সেনাপ্রধান মইন রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশিত সংস্কার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করলেও মরিয়ার্টিকে বলেন, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করবে না।
ঢাকাসহ সারা বিশ্বের মার্কিন দূতাবাসের পাঠানো আড়াই লাখ তারবার্তা গত ৩০ আগস্ট ফাঁস করে দিয়েছে ওয়েবসাইট উইকিলিকস।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত সেনাপ্রধানকে বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক সংস্কার কার্যক্রম সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে এবং তা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর কিছুটা চাপ সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের জন্য সময় লাগবে, তবে এটা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করতে হবে।
সেনাপ্রধান জানান, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের আগে ওই দিনই তিনি ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলগুলোকে সংস্কারে রাজি করানোর জন্য তাঁদের উৎসাহিত করেছেন। কেননা বাংলাদেশ আবার সেই এক-এগারোর আগের অবস্থায় ফিরতে পারে না।
মইন উ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ‘প্রতিবেশী দেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে’ এবং তাদের পথ অনুসরণ করতে চায় না। সেনাবাহিনী বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ করেনি উল্লেখ করে মইন জানান, এমনকি তিনি নিজেও কোনো মন্ত্রণালয়ে যাননি যাতে কেউ এ কথা না বলতে পারে যে তিনি হস্তক্ষেপ করছেন।
জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, পরাজিত দল যাতে পরে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে, সে জন্য এটা প্রয়োজন।
মইন উ আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এ ছাড়া তিনি জরুরি অবস্থা পর্যায়ক্রমে শিথিল করারও ঘোষণা দেবেন।
মইন উ আহমেদ রাষ্ট্রদূতকে বলেন, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন। ‘কোনো পরিস্থিতিতেই’ নির্বাচন এ সময়সীমা অতিক্রম করবে না।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, আসন্ন রাজনৈতিক সংলাপে সেনাবাহিনীকেও অংশ নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে কিন্তু তা সত্ত্বেও সেনাবাহিনী এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেবে না। এটা বেসামরিক উপদেষ্টাদের কাজ।

No comments:

Post a Comment