চলতি বর্ষায় ঝুঁকির মুখে রয়েছে কক্সবাজারের দ্বীপাঞ্চল কুতুবদিয়ার বায়ুবিদ্যুৎ পাইলট প্রকল্প। বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) অর্থায়নে নির্মিত প্রকল্পটি বর্তমানে হুমকির মুখে রয়েছে।
প্রকল্পটি রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) অধীনে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদার ও পাউবো কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এখনও নির্মিত হয়নি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প রক্ষা বাঁধ।

এ ব্যাপারে বিউবোর কুতুবদিয়ার আবাসিক প্রকৌশলী অশোক দাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বায়ুবিদ্যুৎ পাইলট প্রকল্পের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কবে নাগাদ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তিনি এসব তথ্য জানতে বিউবোর কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'বর্তমানে পিডিবির ৫শ' কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন কামিন্স জেনারেটর মেশিন দিয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।' সরবরাহকৃত বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা কত জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে বিউবোর কক্সবাজার জেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, কুতুবদিয়ার বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের কাজ ২০০৬ সালে শুরু হয়ে ২০০৮ সালে শেষ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বিউবোর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে প্যান এশিয়া পাওয়ার সাভির্সেস লিমিটেড নামে একটি সংস্থা। প্রকল্পটিতে এক হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৫০টি বায়ুকল (উইং টারবাইন) স্থাপন করা হয়। প্রতিটি বায়ুকল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। প্রতিটি বায়ুকল গণ্য হবে একটি ইউনিট হিসেবে। প্রতিটি ইউনিটে ৫০ মিটার উঁচু একটি টাওয়ার এবং টাওয়ারের মাথায় দেড় টন ওজনের ডানাবিশিষ্ট একটি ইস্পাতের পাখা স্থাপন করা হয়। একটি উইং টারবাইন থেকে অপরটির দূরত্ব তিনশ' গজ। বায়ুচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের যন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে টাওয়ার জেনারেটর, কন্ট্রোল প্যানেল ও টারবাইন বেল্গড।
পাউবোর কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুল ইসলাম জানান, বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু করতে সম্প্রতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিয়েছে। বাঁধের কাজ শেষ হলেই কুতুবদিয়া দ্বীপের বিদ্যুৎবঞ্চিত মানুষের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
অন্যদিকে পাউবো কুতুবদিয়ার কর্মকর্তা এটিএম মাসুদুর রাবি্ব বলেন, 'বায়ুবিদ্যুৎ পাইলট প্রকল্পটি রক্ষায় পাউবোর কর্তৃপক্ষ এ এলাকায় তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছেন। বর্তমানে দুটি প্রকল্পের বাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে আইনি জটিলতায় বাকি একটি প্রকল্পের কাজ করা যাচ্ছে না।
No comments:
Post a Comment