Tuesday, June 26, 2012

মিয়ানমার সীমান্তে ৮ দিন ধরে বাণিজ্য বন্ধ

টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য এবং ট্রানজিট ৮ দিন ধরে অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে। গত ১৭ জুন ৯০ টন হিমায়িত রুই মাছ নিয়ে একটি ট্রলার স্থলবন্দরে আসে।

এরপর থেকে আর কোনো পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসেনি। মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের পরবর্তী পরিস্থিতি এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। এতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, ১৯৯৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফ-মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য চালু করা হয়। এর পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রী আমদানি রফতানি বাণিজ্য চলতে থাকে। এবারই প্রথমবারের মতো কোনো কারণে অনেকদিন ধরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিন টেকনাফ স্থলবন্দর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরের জেটিতে একটি মাত্র ট্রলার নোঙর অবস্থায় রয়েছে।

ব্যবসায়ী এম আবছার সোহেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফি অ্যান্ড ব্রাদার্সের মাধ্যমে গত ১৭ জুন ৯০ টন হিমায়িত রুই মাছ নিয়ে একটি ট্রলার স্থলবন্দরে আসে। মাছভর্তি ট্রলারটি পণ্য খালাস করা হলেও সাগর উত্তাল থাকায় মিয়ানমারে আর ফিরে যেতে পারেনি।

এদিকে, ৮ দিন ধরে অঘোষিতভাবে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা কাজের অভাবে বেকার জীবন-যাপন করছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্র ও কায়ুকখালীয়া খালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিয়ন্ত্রণাধীন একদিনের ট্রানজিট ঘাট দিয়ে ৮ জুনের দাঙ্গার পর থেকে যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা আটকে পড়া ব্যবসায়ীরা স্বদেশে ফিরে যেতে স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্রে ভিড় করছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের অভিবাসন কেন্দ্রের কর্মকর্তা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমার সরকার অঘোষিতভাবে নৌপথ বন্ধ রাখায় এখনও বাংলাদেশি ৪ নাগরিক আব্দুল জলিল, আবু বক্কর, রিয়াজ উদ্দিন ও জসিম উদ্দিন মিয়ানমারে আটকা পড়ে আছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নাসাকাবাহিনী ও মিয়ানমার অভিবাসন কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে একটি ট্রলারে করে  রোববার ২৬ জনকে মিয়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) টেকনাফের ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার পর থেকে ৮ দিন ধরে টেকনাফ-মিয়ানমারে একদিনের ট্রানজিট বন্ধ রয়েছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বাংলানিউজকে বলেন, “৮ দিন ধরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।” আমদানি ও রফতানিকারকদের দৈনিক কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

ইউনাইটেড ল্যান্ডপোর্ট টেকনাফ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল মোহাইমেন বাংলানিউজকে বলেন, “মিয়ানমারের জাতিগত সংঘাতের কারণে দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্য অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে।”

টেকনাফ শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তা কাজী আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, মিয়ানমারের জাতিগত দাঙ্গার কারণে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় দৈনিক ৩০ লাখ টাকা করে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

No comments:

Post a Comment