Wednesday, December 15, 2010

আমরাও মুক্তিযোদ্ধা: জামায়াতনেতা আজহারুল ইসলাম

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করলেও এবার নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, ‘জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী যে সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন, আমরাও সে সেক্টরে যুদ্ধ করেছি। তিনি যদি মুক্তিযুদ্ধের সময় নয় মাস সরকারি চাকরি করে রাজাকার না হন, তাহলে আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে কাজ করে কেন রাজাকার হব। আমরাও মুক্তিযোদ্ধা।’

বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা মহানগর জামায়াত আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ টি এম আজহার এসব কথা বলেন। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যা খুশি তা-ই করবেন, যাকে খুশি রাজাকার বানাবেন, এটা হবে না।’
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী রাজাকার, আল বদর বাহিনী গঠনেও তৎকালীন জামায়াত ও তার ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা-কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জামায়াতের বর্তমান কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী।
জামায়াতে ইসলামীর বর্তমান শীর্ষস্থানীয় নেতাদের অনেকেই ছিলেন আল বদর বাহিনীর নেতৃত্বে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাক্ষিক গোপন প্রতিবেদনে (ফোর্টনাইটলি সিক্রেট রিপোর্ট অন দ্য সিচুয়েশন ইন ইস্ট পাকিস্তান) দেখা যায়, জামায়াতের বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এই বাহিনী সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এ টি এম আজহারসহ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় বর্তমান নেতাদের অনেকেই আলবদর বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেন।
অথচ আজকের আলোচনা সভায় এ টি এম আজহার এসব ভূমিকা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পর থেকে মিথ্যা কথা প্রচার করা হচ্ছে। জনগণ এটা বিশ্বাস করলে আমাদের আজ এ অবস্থা হতে পারত না। আমাদের লোকেরা সাংসদ হতে পারত না। বাংলাদেশের লোকরা এসব বিশ্বাস করে না। টেলিভিশনে আমাদের যতই যুদ্ধাপরাধী বলা হোক না কেন, জনগণ তা বিশ্বাস করে না।’
বিজয় দিবসের প্রতি ইঙ্গিত করে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘এই দিবস এলে তারা (আওয়ামী লীগ) একটি কথা বলে, “রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই”। রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার নামে তারা আসলে ইসলামমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়। জীবন থাকতে আমরা ইসলামমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দেব না।’

No comments:

Post a Comment