Sunday, December 05, 2010

অটোরিকশা ট্যাঙ্কিক্যাব বিড়ম্বনা

মহানগরবাসীকে নিত্য নানা রকম বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। এসব বিষয় জনস্বার্থ ও জনজীবনে মারাত্মকভাবে আঘাত করলেও এর বিপরীতে দায়িত্বশীলদের নির্বিকারত্ব সংগত কারণেই ব্যাপক প্রশ্নবোধক। রাজধানীতে সিএনজি অটোরিকশা, মিশুক ও ট্যাঙ্কি্যাব চালকদের যাত্রী হয়রানি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অপকৌশল দিন দিন মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। তারা কোনো রকম নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। দীর্ঘদিনের এ সমস্যা এখন সংকটে রূপ নিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে_তাদের নিয়ন্ত্রণ করা কিংবা নিয়মনীতির মধ্যে চলার, দেখভালের দায়দায়িত্ব যাদের, তারা উদাসীন কিংবা মৌন কেন? অটোরিকশা ও মিশুক চালকদের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী হয়রানি করে ট্যাঙ্কি্যাব চালকরা। রাজধানীতে চলাচলকারী বেশির ভাগ ট্যাঙ্কি্যাব চলাচলের অনুপযোগী কিংবা ত্রুটিপূর্ণ হলেও থেমে নেই চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা অথবা দৌরাত্ম্য।
৪ ডিসেম্বর সহযোগী একটি দৈনিকে 'ট্যাঙ্কি্যাবের স্বেচ্ছাচারিতায় অসহায় নগরবাসী' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যাত্রী হয়রানি ও চালকদের দৌরা@ে@@@্যর চিত্র পুনর্বার ফুটে উঠেছে। মিটারের কার্যকারিতা তো কবেই হারিয়ে গেছে, পাশাপাশি যাত্রীদের নয়_চালকদের মর্জিই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহানগরীতে যাত্রী ভোগান্তি অবসানের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে অটোরিকশা, মিশুক ও ট্যাঙ্কি্যাব চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে গৃহীত এ ব্যবস্থার আসল লক্ষ্য ভেস্তে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, চালকদের একটা অংশ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়েছে। সমাজবিরোধী কিংবা জননিরাপত্তা হরণকারী অপশক্তির সঙ্গে এই একাংশের সখ্যের কারণে যাত্রীসাধারণ ভুগছে চরম নিরাপত্তাহীনতায়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ঘটনাও ঘটেছে, যেগুলোর কোনো প্রতিকার হয়নি। সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিটি বিভাগ এ ব্যাপারে নির্বিকার। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? ইলেকট্র্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় এ হয়রানির চিত্র তুলে ধরে বারবার প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও বিষয়টি থেকে যাচ্ছে প্রতিকারহীন। বাড়তি ভাড়া কেন চালকরা আদায় করছে, এর কোনো কৈফিয়তও তারা দিতে নারাজ। এ অবস্থায় নিকট অতীতে সরকার প্রথম কিলোমিটার ২৫ টাকা করার ঘোষণা দিয়ে 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' বসিয়েছে। তখনই মালিকরা এসব পরিবহনের জমাও বাড়িয়ে দেন। এমতাবস্থায় যাত্রী হয়রানি আরো বেড়ে যায়। যাত্রীরা জিম্মি। যাত্রীস্বার্থ দেখার কি কেউ নেই? যাওয়া না যাওয়া কিংবা ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চালকদের হরহামেশাই ঝগড়া-বিবাদ হচ্ছে। জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট এত বড় একটি বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের উদাসীনতা, নির্বিকারত্ব অবশ্যই প্রশ্নবোধক। এ অবস্থা চলতে পারে না। এর আশু সুরাহা দরকার। মিটার ব্যবহার, যাত্রীদের চাহিদামাফিক স্থানে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় নিশ্চিত করাসহ এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর অবস্থান জরুরি। যাত্রী হয়রানির বিষয়টি সরকারকে গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে আর কালক্ষেপণ না করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতেই হবে। পাবলিক বাস সার্ভিসগুলোর ক্ষেত্রেও স্বেচ্ছাচারিতার চিত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে। নগর পরিবহনের ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য বিরাজ করছে, এর দায় সরকার এড়াতে পারে না।

No comments:

Post a Comment