Friday, January 14, 2011

আওয়ামী এমপির গাড়িবহরে অস্ত্র: যশোরে তোলপাড়

শোরের শার্শায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের ‘গাড়িবহরে’ থাকা একটি প্রাইভেট কার থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি, টাকাসহ আটক যুবলীগের পাঁচ নেতা-কর্মীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত বুধবার র‌্যাব প্রাইভেট কারটি তল্লাশি করে একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি শাটারগান, নির্বাচনী পোস্টার ও এক লাখ
৭২ হাজার টাকা উদ্ধার করে। আটক করা হয় শার্শা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন, কর্মী বাবলু রহমান, রুহুল আমিন, জাকির হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। এর আগে চৌগাছা থেকে মঙ্গলবার রাতে একটি নাইন এমএম পিস্তলসহ আটক করা হয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাইফুর রহমান বাবুলের চাচাতো ভাই রুবেল ও তার সঙ্গী রায়হানকে। তারা দুজনই স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মী।
পৌরসভা নির্বাচনের আগে অস্ত্র ও গুলিসহ ক্ষমতাসীন দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মী আটকের ঘটনায় যশোরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আতঙ্কও দেখা দিয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনের পক্ষে সন্ত্রাস সৃষ্টি এবং টাকা দিয়ে ভোট কেনার জন্য আটক যুবলীগ নেতা-কর্মীরা বেনাপোলে যাচ্ছিল। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অস্ত্রসহ যুবলীগ নেতাকে আটকের ঘটনায় আমরা প্রশাসনকে স্বাগত জানাচ্ছি।’
র‌্যাব-৬-এর যশোর ক্যাম্প ইনচার্জ লে. কমান্ডার নূর মোহাম্মদ তারিক আজিজ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুপুর আড়াইটার দিকে শার্শা বাজার এলাকা থেকে কারসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি শাটারগান, নাইন এমএম পিস্তলের চারটি গুলি, একটি ম্যাগাজিন ও টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর আটককৃতদের যশোর র‌্যাব ক্যাম্পে আনা হয়। রাতেই তাদের শার্শা থানায় সোপর্দ করা হয়।
শার্শা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আজিজ বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটির তদন্তে নেমেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শার্শার এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের গাড়িবহরের শেষে সোহরাবের গাড়িটি ছিল। তারা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বেনাপোলে যাচ্ছিল। ওই গাড়ি থেকেই র‌্যাব অস্ত্র, টাকা ও নির্বাচনী পোস্টারসহ যুবলীগ নেতা-কর্মীদের আটক করে। তবে সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, ‘আমার কোনো গাড়িবহর ছিল না।’
ঘটনা সম্পর্কে যশোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রেন্টু চাকলাদার বলেন, ‘সোহরাব হোসেন শার্শা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। অস্ত্রসহ তার আটকের কথা আমরা শুনেছি। বিষয়টি সত্য হলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
র‌্যাব আরো জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চৌগাছা সোনালী ব্যাংকের কাছ থেকে রুবেল ও রায়হানের দেহ তল্লাশি করে একটি নাইন এমএম পিস্তল পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের আটক করা হয়। এ ব্যাপারে চৌগাছা থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
আটককৃত রুবেলের চাচা উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম হাবিব বলেন, ‘ঘটনাটি সাজানো নাটক।’

No comments:

Post a Comment