Friday, January 14, 2011

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বিশেষ নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত

বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালীন যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা ও জরুরি প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য সশস্ত্র বাহিনীর কাছে সহযোগিতা চেয়ে দু-এক দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়া হবে।
অন্যদিকে খেলা দেখতে বিভিন্ন দেশের যে ১৩ জন রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাঁদের এবং খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের নামের তালিকা দ্রুত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও গোয়েন্দা বিভাগের কাছে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১১ নিরাপত্তা জাতীয় উপকমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্প্রতি এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বকাপ ক্রিকেট সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজন করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২৩ সদস্যবিশিষ্ট এ নিরাপত্তা কমিটি গঠন করে। বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও খুলনার মেয়রকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্বকাপ উপলক্ষে নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার জন্য প্রায় ৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আমরা এ মাসের মধ্যে নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া ভিভিআইপি রোডের আশপাশে যেসব বাড়ি রয়েছে, তা রং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে নারায়ণগঞ্জের কিছু স্থাপনায় রং করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।’
জানা গেছে, বিশ্বকাপের খেলা চলার সময় ভেন্যুগুলোকে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের ঢাকা সেনানিবাসের ভেতর দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হবে। জরুরি উদ্ধার তৎপরতার জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা দেওয়া হবে। পুলিশকে যানবাহন ও সরঞ্জাম সহায়তা দেওয়া এবং সিএমএইচকে জরুরি চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত রাখা হবে।
জানা গেছে, পুলিশ সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কী কী যানবাহন ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করবে, তার একটি চাহিদাপত্র পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে পাঠাবে। এ ছাড়া বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে সংগৃহীতব্য পুলিশের সব যানবাহন ও সাজসরঞ্জাম ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সংগ্রহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যানবাহন বিশ্বকাপ ক্রিকেট উপলক্ষে দায়িত্ব পালন করবে, তাদের আগাম নিরাপত্তাব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে বিসিবি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এ ছাড়া ভেন্যুতে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যক্তি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদের পরিচয়পত্র দিতে হবে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভেন্যু ও হোটেলের অগ্নিনিরাপত্তা সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যে সুপারিশ করেছে, তা বাস্তবায়িত হয়েছে কি না, তা সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে।
খেলা দেখতে আসা বিদেশি অতিথি ও দর্শকদের হোটেলে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে যাতায়াত ও থাকার সুবিধার্থে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হজরত শাহ আমানত বিমানবন্দর ও পুলিশ যেসব হোটেলের নিরাপত্তা দিয়েছে, সেসব হোটেলে অভ্যর্থনা ডেস্ক ও ট্যাক্সি সার্ভিসের কাউন্টার বসানো হবে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত খেলা চলবে।

No comments:

Post a Comment