Friday, June 15, 2012

বিনা বিচারে ১১ বছর জেলে অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন বন্দি হারুন

'বিনা বিচারে ১১ বছর বন্দি যুবকের আকুতি, ভিখারিনী মাকে একবার দেখার সুযোগ দিন'_শীর্ষক সংবাদটি ২৮ মে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত হওয়ার পর অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার কারাবন্দি হারুন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

গতকাল তাঁকে মুক্তি দেওয়ার পর কয়েকজন সজ্জন ব্যক্তি তাঁর হাতে কিছু নগদ টাকাও তুলে দেন। মুক্তি পাওয়ার আনন্দে কেঁদে হারুন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানান এবং তাঁকে মুক্ত করতে যাঁরা ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর গত ৫ জুন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী এবং বিচারপতি এস আর এম নাজমুল আহসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হারুনের পক্ষে জামিনের আবেদন করেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। শুনানির পর হারুনের জামিন মঞ্জুর করা হয়। এই জামিনের আদেশ গতকাল চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছান বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের নেতা অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান। পরে দুপুরে জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পর কারা কর্তৃপক্ষ হারুনকে মুক্তি দেয়।
এ সময় হারুনের বড় ভাই আবদুল হালিম কারা ফটকে হারুনকে দীর্ঘ ১১ বছর পর দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে সেখানে উপস্থিত হন একটি বেসরকারি কম্পানিতে চাকরিরত কর্মকর্তা এস এম সাবি্বর হোসাইন। তিনি হারুনের হাতে নগদ সাত হাজার টাকা তুলে দেন। ঢাকাস্থ একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলামের পক্ষে হারুনকে আরো ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এ ছাড়া হারুনের জামিনের বিষয়ে সহযোগিতা করেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ ফারুকী।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের খুলশী থানার পুলিশের হাতে জননিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় হারুন ২০০১ সালের ৫ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসেন। ২০০২ সালের ২৩ জানুয়ারির পর হাজিরা না থাকায় হারুনকে আর আদালতে হাজির করা হয়নি। সেই থেকে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি ছিলেন হারুন। গতকাল প্রায় ১১ বছর পর হারুন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন।
মুক্তির পর হারুন বলেন, 'এবার গ্রামে গিয়ে মায়ের কাছে থাকব এবং সেখানে কিছু কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করব।' হারুনের ভাই আবদুল হালিম বলেন, 'আপনাদের (পত্রিকা) এবং কিছু মহৎ মানুষের সহযোগিতায় আমার ভাই মুক্তি পেয়েছে। এ জন্য আমি আল্লাহর কাছে আপনাদের জন্য দোয়া করব।' চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ছগীর মিয়া বলেন, 'শেষ পর্যন্ত হারুনকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি দিতে পেরেছি, এটাই বড় আনন্দের।'

No comments:

Post a Comment