Friday, June 15, 2012

সংরক্ষিত বনের গাছ পাচার চলছেই

কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে প্রতিদিন কাঠ পাচারের মহোৎসব চলছে। ক্ষমতাসীন দলের উপজেলা পর্যায়ের এক শীর্ষ নেতার পরিবারের সদস্যরা প্রতিনিয়ত সংরক্ষিত বনের বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যমান মাদার ট্রিসহ (গর্জন) কচিগাছ কেটে উজাড় করছে।

সম্প্রতি প্রায় ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ১৩টি গর্জন গাছ কেটে প্রকাশ্যে পাচার করলেও বন বিভাগসহ পুলিশ কাঠ চোরদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
৫ জুন রাতে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের সংরক্ষিত এলাকা থেকে ১৩টি গর্জন গাছ কেটে ভোরে ট্রাকে চকরিয়া বদরখালী সড়ক দিয়ে পাচারকালে সাহারবিল রামপুরার নুরুল আমিন চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে পেঁৗছার পর কাঠভর্তি গাড়িটির চাকা পাংচার হয়ে গেলে জনতার চোখে পড়ে কাঠ পাচারের দৃশ্যটি। ওই সময় স্থানীয় সাংবাদিকরা খবর পেয়ে কাঠগুলোর ছবি তুলতে যায়। ছবি তোলার সময় কাঠের সঙ্গে থাকা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির ছোটভাই নাছির উদ্দিন সাংবাদিকের দিকে তেড়ে আসে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী আলেকশাহ বাজারে বোট তৈরির জন্য ওইসব চোরাই কাঠ নিয়ে যাওয়া হয়েছে । নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পাচারকারীরা চোরাই কাঠগুলো আরেকটি গাড়িতে ওঠানোর সময় চকরিয়া থানা পুলিশ ও উপকূলীয় কোস্টগার্ডের নজরে পড়লে কাঠ পাচারের ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানানো হয়; কিন্তু চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার ভাইয়ের গাছ জানার পর তারা ওই কাঠ আটক না করে ফিরে যায়।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার সহোদর নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগীরা ৫ জুন রাতে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের উচিতারবিল এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩টি গর্জন গাছ কেটে গভীর রাতে ট্রাক ভর্তি করে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ এলাকা অতিক্রমকালে বনকর্মীরা প্রথমে বাধা দিলেও পরে রহস্যজনক কারণে ছেড়ে দেয়। কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ডিএফও আবদুল খালেক খানকে এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে অবহিত করা হলে তিনি ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে গাছ উদ্ধারের নির্দেশ দেন; কিন্তু ডিএফওর নির্দেশ সত্ত্বেও ওই কর্মকর্তা চোরাই কাঠভর্তি গাড়িটি আটক করতে পারেননি।
এ ব্যাপারে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখ মতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শাসক দলের নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডে আমরা অতিষ্ঠ, তাদের তাণ্ডব থেকে বনের মূল্যবান গাছপালা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফাঁসিয়াখালী এলাকার শঙ্কিত লোকজন দাবি করেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে অচিরেই এ রেঞ্জের শতবর্ষী গর্জনসহ মূল্যবান বনজসম্পদ বিরান হতে আর বেশি দিন সময় লাগবে না।

No comments:

Post a Comment