Sunday, January 16, 2011

বিপ্লবের প্রতীক বোয়াজিজি

নগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনেই জাইন এল আবিদিন বেন আলীর পতন ঘটেছে। কোনো একক দল বা নেতা এই আন্দোলন গড়ে তোলেননি। ২৩ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রাষ্ট্রনায়কের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে মানুষকে সাহস জুগিয়েছেন অখ্যাত যুবক মোহাম্মদ বোয়াজিজি।

নিজের জীবন দিয়ে তিনি জাইন এলের অপশাসনের চিত্র তুলে ধরেছেন দেশবাসীর সামনে। তাই সরকার পতনের পর বোয়াজিজি পাচ্ছেন জাতীয় বীরের মর্যাদা।
তিউনিসিয়ায় গণ-আন্দোলন শুরু হয় বোয়াজিজির প্রতিবাদের মাধ্যমেই। ২৬ বছর বয়সী এ যুবক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়েও চাকরি পাচ্ছিলেন না। নিরুপায় হয়ে রাস্তায় ফল বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে দোকানদারির অনুমতি নেননি বলে ১৭ ডিসেম্বর পুলিশ তাঁর ফলের ঝুড়ি ও টাকাপয়সা কেড়ে নেয় এবং নির্যাতন করে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে বোয়াজিজি প্রতিবাদ জানালেও কেউ তাঁকে সহায়তা করেননি। ক্ষোভ-দুঃখ আর অপমানে ওই দিনই সিদি বোজিদ এলাকায় শত শত মানুষের সামনে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। এ ঘটনার পরই বেকারত্ব দূর করার দাবিতে তিউনিসিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে। গত ৪ জানুয়ারি যখন হাসপাতালে বোয়াজিজির মৃত্যু হয়, তখন প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে তিউনিসিয়ার অলি-গলিতে।
তিন সপ্তাহের আন্দোলনে তিউনিসিয়ায় ৬৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে দাবি করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এত মৃত্যুর মধ্যেও বোয়াজিজির আত্মাহুতির বিষয়টি বিশেষ মর্যাদা পাচ্ছে। মানুষকে রাস্তায় নামতে অনুপ্রাণিত করার জন্য তাঁর শরীরে আগুন লাগানোর ছবিটিই ব্যবহার করেছে বিক্ষোভকারীরা। বোয়াজিজির নামে ফেইসবুকে একটি পেইজ খোলা হয়েছে, যাতে তাঁর পরিচয় দিয়ে লেখা হয়েছে, 'তিউনিসিয়ার বিপ্লবের প্রতীক'। আর বোয়াজিজির মতো সাহসী ও প্রতিবাদী যুবকের অপেক্ষা করছে অন্যান্য আরব দেশের নিপীড়িত মানুষ। মিসরের মানবাধিকারকর্মী আবদেল হালিম কানদিল যেমন বলেছেন, 'বোয়াজিজির মতো একজন মানুষ দরকার আমাদের।' সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।

No comments:

Post a Comment