Monday, December 06, 2010

 সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদঃ বিকেলে হরতাল ঘোষণা, সন্ধ্যায় প্রত্যাহার

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে ২৬ ডিসেম্বর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করার ঘোষণা দিয়েছেলেন সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দিন খান। তবে সন্ধ্যায় সংগঠন থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৬ তারিখের পরে হরতাল আহ্বান করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে লাগাতার বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালনের কথাও বলা হয়।
আজ সোমবার বিকেলে পুরানা পল্টনে মাসিক মদিনা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মাওলানা মুহিউদ্দিন খান। শিক্ষানীতির খসড়া সংশোধনের দাবিতে সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সদস্যরা দুপুরে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। তবে মত্স্য ভবন মোড়ে পুলিশ তাঁদের আটকে দেয়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর বিকেলে পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে মুহিউদ্দিন খান অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁদের ওপর নির্যাতন করেছে। এর প্রতিবাদে আগামী ২৬ ডিসেম্বর হরতাল করা হবে বলে।
মুহিউদ্দিন খান বলেন, ‘যদি জানতাম স্মারকরিপি দিতে গিয়ে বর্বরতা শিকার হতে হবে, তাহলে আমরাও সেভাবে যেতাম, সিন ক্রিয়েট করতাম।’ এরপর কাল মঙ্গলবার বিক্ষোভ ও সামনে হরতাল করার ঘোষণা দেন তিনি। কবে হরতাল দেবেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কয়েকজন সহকর্মী হজে গেছেন। এখনো তারা আসেননি। ডিসেম্বরে অনেক স্কুলের ভর্তি পরীক্ষা, বার্ষিক পরীক্ষা আবার বিজয় দিবস আছে। সব শেষ হয়ে আসলে ২৬ ডিসেম্বর দেশব্যাপী হরতাল।
পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘কাল থেকে লাগাতার বিক্ষোভ করব, দেখি কয় দিন বানচাল করতে পারে। মসজিদে মসজিদে আলোচনা করব, দেখি কয়টা মসজিদ দখল করতে পারে।’
পরিষদের নেতা ও খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মো. ইসহাক বলেন, ‘আমরা তো গোলমাল করতে যাইনি। ৬০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। অন্তত হাজারবার স্মারকলিপি দিয়েছি। এটি একটি গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। কিন্তু পুলিশ এতটাই মারমুখি ছিল যে দাঁড়াতেই পারলাম না।’
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা অশোভন আচরণকারী পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আবদুল লতিফ নেজামী, যাইনুল আবেদীন, আলমগীর মজুমদার, মহিউদ্দিন রব্বানী, খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তবে সন্ধ্যায় ওলামা মাশায়েখ পরিষদ যে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে তাতে দাবি করা হয়, মত্স্য ভবনের সামনে পুলিশ ওলামা-মাশায়েখদের ওপর লাঠিপেটা করেছে। এরপর ওলামা নেতারা হেঁটে প্রেসক্লাবে এলেও তাঁদের সেখানে ঢুকতে বা রাস্তায় দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। এরপর বলা হয়, পরবর্তী সময়ে তাঁদের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ২৬ তারিখের পরে হরতাল।
সংবাদ সম্মেলন ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দুই ধরনের বক্তব্যের বিষয়ে পরিষদের নেতা ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘ঠিক নির্দিষ্ট করে তারিখের ঘোষণা করা হয়নি। তবে ২৫ তারিখের পর যেকোনো দিন হরতাল করব।’
তবে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুপুরে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় থেকে নিজ বাসভবনে যাবেন। তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবেই সেখানে কাউকে দাঁড়াতে দেইনি।’
জানা গেছে, পুলিশ সংগঠনের ব্যানার কেড়ে নিয়ে তাঁদের ধাক্কা দিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল মারে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

No comments:

Post a Comment