Monday, December 06, 2010

মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের তহবিল সরানোর অভিযোগ তদন্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের নামে ঋণ দিয়ে গরিব মানুষের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে। কোথাও গরিব মানুষের উন্নয়ন হয়নি। কীভাবে জনগণের টাকা নিয়ে ভোজভাজি হয়, এটাও একটা দৃষ্টান্ত।
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার তাঁর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। রাশিয়া, বেলজিয়াম ও জাপান সফর শেষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।আমাদের সময় পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান প্রশ্ন করেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকে সরকারের মালিকানা আছে। কিন্তু কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে মুহাম্মদ ইউনূস নীরব থাকেন। এটাই তাঁর রক্ষাকবচ। গ্রামীণ ব্যাংক দিয়ে তিনি অনেক প্রতিষ্ঠান করেছেন। এখানে অনেক ফাঁকিবাজি আছে। তদন্ত হওয়া দরকার।’
এ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দরিদ্র মানুষকে দেখিয়ে শুধু টাকা আনা হলেও কোথাও তাদের উন্নয়ন হয়নি। মানুষকে ঋণ দিয়ে অর্থ চুষে খাওয়া—আমি এটা কখনোই সমর্থন করিনি। প্রতিবাদ করেছি।’ তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংককে এমনভাবে কবজা করা হয়েছে, যেন এটা ব্যক্তিসম্পত্তি। এরও তদন্ত হওয়া উচিত। গরিব মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। ভালো ভালো কথা বলে গরিব মানুষের রক্ত চুষে খাওয়া হচ্ছে। এখন অনেক কিছুই বেরিয়ে আসছে। সেনানিবাসের বাড়ির প্রতি খালেদা জিয়ার যে ভালোবাসা, ড. ইউনূসেরও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি সে রকম ভালোবাসা। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক জনগণের সম্পত্তি। কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংককে ভালোবেসে নিজের করা হচ্ছে। ইউনূস সাহেব গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতি ভালোবাসায় পড়ে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৮ সালে ব্যাংকটা বসে যাচ্ছিল। তখন সরকারের পক্ষ থেকে ৪০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু এটাকে এমনভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যেন ব্যক্তিসম্পত্তি। গ্রামীণফোন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম আমিও ধোঁকায় পড়েছিলাম। বলা হয়েছিল, গ্রামীণফোন চালু করে গরিব মহিলাদের উন্নয়ন করা হবে। তারা স্বাবলম্বী হবে। তাই গ্রামীণফোনের ব্যবসার অনুমোদন দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর গরিব মহিলাদের ফোন নেই। গ্রামের মেয়েরা যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থাতেই আছে। মানুষকে নিয়ে এত ধোঁকাবাজি করা হচ্ছে—এটা কারও কাম্য নয়। এটারও তদন্ত হওয়া উচিত।’
নরওয়ের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক প্রামাণ্যচিত্রে শান্তিতে নোবেলজয়ী ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ ব্যাংকের ১০ কোটি ডলার নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য তহবিলে সরানোর অভিযোগ তোলা হয়। গ্রামীণ ব্যাংক অবশ্য এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেছে।

No comments:

Post a Comment