Sunday, January 23, 2011

অপরাজেয় সেই ট্যাংক

কাত্তরের রণাঙ্গনে মিত্র বাহিনীর অপরাজেয় সেই ঐতিহাসিক ট্যাংকটি কলকাতার ব্রিগেড মাঠে সংরক্ষিত রয়েছে। যুদ্ধজয়ী এ ট্যাংকটি দেখতে অনেকেই সেখানে যান।

রেইনট্রির ছায়ায় দাঁড়িয়ে ট্যাংক দেখেন, আর বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস জানার চেষ্টা করেন। ভারতের ইস্টার্ন কমান্ড এ ট্যাংকটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে উপহার দিয়েছিল। এর পর থেকে যত্ন করে ট্যাংকটি ঐতিহাসিক গড়ের মাঠের পাশে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান কম নয়। এক কোটি শরণার্থীর খাবারের পাশাপাশি ভারত সরকার তাদের সেনাবাহিনীকে রণাঙ্গনে পাঠায়। অনেক ভারতীয় সৈন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মার্চ মাসেই বাঙালিদের সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। বিএসএফ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা রাজ্যে শরণার্থী শিবির চালু করা হয়। এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়। ওই শরণার্থীর পেছনে যুদ্ধকালীন ৯ মাসে ভারত সরকারের খরচ প্রায় হয় ৩৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিদেশি সাহায্য পাওয়া যায় ২৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। (সূত্র : আনন্দ বাজার)। ভারতের সেনাবাহিনী গেরিলা যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল ওবানের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয় মুজিব বাহিনী। ১৯৭১ সালের নভেম্বরে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ কমান্ড গঠনের পর এর অধিনায়ক করা হয় লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরাকে। এর পর যৌথ বাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে পূর্ব পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে। ৬ ডিসেম্বর যশোর জেলাকে শত্রুমুক্ত করে যৌথ বাহিনী ঢাকার দিকে এগোতে থাকে। ১৬ ডিসেম্বর সকালে যৌথ বাহিনী রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করে। বিকেলে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে যৌথ বাহিনীর কমান্ডার লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের পক্ষে লে. জে. নিয়াজি আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন দেশ বাংলাদেশ। কলকাতার সংরক্ষিত সেই ঐতিহাসিক অপরাজেয় ট্যাংকের মতো একাত্তরের রণাঙ্গনের কোনো ট্যাংক, বিমান, কামান দেশে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

No comments:

Post a Comment