Monday, June 13, 2011

সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, 'সরকার ও বিরোধী দলকে সমঝোতার মধ্য দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতির বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে বের করতে হবে।' তাঁর কথার মধ্য দিয়ে সমকালীন গণতান্ত্রিক বিশ্বের বাস্তবতাই প্রতিফলিত হয়েছে। কারণ প্রতিবেশী ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর উচিত নির্বাচন কমিশনকে আরও স্বাধীন ও শক্তিশালী করার লৰ্যে ভূমিকা রাখা। বিএনপি দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, গ্যাস, পানি ও বিদু্যতের সঙ্কটসহ অন্য যেসব সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছে তা মূলত জাতীয় সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে হবে। হরতালের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী রবিবার সকাল ছয়টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যনত্ম ৩৬ ঘণ্টা একটানা হরতাল আহ্বান করেছে। দল দুটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জোটগতভাবে নয়; তাঁরা যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে হরতাল পালন করছেন। তারা মূলত সরকারের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধানত্মের প্রতিবাদে এবং সেই সঙ্গে অন্য বেশ কয়েকটি দাবিতে এ হরতাল ডেকেছেন। উলেস্নখ্য, বিএনপি ৰমতায় থাকাকালে সর্বদা হরতালের বিরোধিতা করে। সম্প্রতি বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বাজেট উপস্থাপিত হয়েছে। সমাজের সর্বসত্মরে বাজেট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ঠিক এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে দেশব্যাপী হরতাল আহ্বানের কোন যৌক্তিকতা আছে কি? দেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও দায়িত্বশীল নাগরিক ইতোমধ্যে এ হরতালের নিন্দা করেছেন। তারা বলেছেন, এর ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মতৎপরতা মারাত্মকভাবে বিঘি্নত হবে। অফিস, আদালত, কল-কারখানায় স্বাভাবিক কাজকর্ম বাধাগ্রসত্ম হওয়ায় দেশের সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের স্বীকার হবেন।
যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে; আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তার সহজ সমাধান সম্ভব ছিল। ৩৬ ঘণ্টার হরতাল আহ্বান করে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বিপর্যসত্ম করে লাভ করোরই হবে না; বরং সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ৩৬ ঘণ্টার হরতাল আহ্বানের আসল উদ্দেশ্য কি? এতে কার লাভ? এ ধরনের হরতালে জাতীয় অর্থনীতি আরও বেশি বিপর্যস্ত হবে।

No comments:

Post a Comment