Monday, June 13, 2011

বাজেট ভাবনা by এম আর খায়রুল উমাম

কটা দেশের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের সম্ভাব্য হিসাব জাতীয় বাজেট। জাতীয় উন্নয়নকে সামনে রেখে সরকার তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বাজেটে বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ করে এবং সে মতো সারাবছর ব্যয় করে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের অর্থের সীমাবদ্ধতা আছে। প্রাধিকার নিরূপণ করেই ব্যয়ের খাত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অতীতে জনগণের অজান্তেই বাজেট প্রক্রিয়াকে রাখা হতো, জন অংশগ্রহণের কোন সুযোগ ছিল না।

সরকার বাজেট ঘোষণা করলে সারাদেশে সরকারি দল তাকে গণমুখী বলে এবং বিরোধী দল গণবিরোধী বলে মিছিল করেই দায়িত্ব শেষ করত। কিন্তু বর্তমানে অনেকেই বাজেট বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠছে। দেশের সব শ্রেণীর নাগরিকের জন্য অত্যন্ত জরুরি এই বাজেটের প্রতি আগ্রহ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সরকার ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে জনঅংশগ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টিতে এগিয়ে এসেছে। এখন বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সরকার যেমন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার সঙ্গে মতামতের সুযোগ সৃষ্টি করেছে আবার বিপরীতে সাধারণ মানুষও এগিয়ে এসেছে বাজেট তারা কেমন দেখতে চায়, তা জানাতে। এতে বাজেটের ব্যর্থতার অংশ কমে যাবে এবং সাফল্যের অংশ বৃদ্ধি পাবে, তা জোর দিয়ে বলা যায়। এখন সরকারের দায়িত্ব জনগণের মতামতের মূল্যায়ন করা।
'মানুষ কোনদিন কোন যথার্থ হিতকে ভিক্ষারূপে গ্রহণ করিবে না, ঋণরূপেও না, কেবল প্রাপ্য বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে।' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাপ্য কথাটার মধ্যে অধিকারের বিষয়টা পরিষ্কার। জাতীয় বাজেট প্রণয়নে 'অধিকার' কথা তুললে অনেকেই আঞ্চলিকতা দোষে দুষ্ট করতে পারে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ে না, তাই অধিকারের প্রশ্ন তুলতে হয়। বর্তমান সরকার জেলাভিত্তিক বাজেট প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু এখন মনে হয় সরকার তার ঘোষণা থেকে সরে এসেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই জেলাভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন সম্ভব নয়। কারণ আমাদের নীতিনির্ধারকরা তাদের বাড়িটাই বাংলাদেশ মনে করে। যার যতটুকু ক্ষমতা আছে তিনি তার বাংলাদেশের জন্য সবটাই নিবেদন করে থাকেন। এমন নীতি হওয়ার ফলে জাতীয় বাজেটে সুষম বণ্টন লক্ষ করা যায় না। যশোরে কোন মন্ত্রী নেই, কুষ্টিয়ায় কোন মন্ত্রী নেই, সাতক্ষীরায় একজন মন্ত্রী ও খুলনায় একজন প্রতিমন্ত্রী আছে। সারা খুলনা বিভাগের ভাগে মাত্র দেড়জন (মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী)। এই দেড়জন খুলনা বিভাগের উন্নয়নের জন্য কতটা ভূমিকা রাখতে পারবেন। ৬০ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর দেশে খুলনা বিভাগ অবহেলিত থেকে যাবে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় যশোরসহ খুলনা বিভাগ বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে বছরের পর বছর। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস লাইন প্রকল্প বন্ধ করে বরাদ্দকৃত অর্থ সিলেটের প্রকল্পে নিয়ে নিতে কোন সমস্যা হয় না। মাঝে আমরা কয়েকটা জেলার মানুষ মাসে ২৪ ঘণ্টা দু'বার্নারের চুলো জ্বালিয়ে ৩৫০ টাকার রান্না করার সুযোগ থেকে এখনো বঞ্চিত আছি। মাসে দু-আড়াই হাজার টাকার গ্যাস পুড়িয়ে রান্না করতে হচ্ছে। তারপর আজ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা হলে কাল পাশের জেলার ক্ষমতাধর তা নিজের বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য টানাটানি শুরু করে দেন। এমন ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। তাই আঞ্চলিকতার দোষ মাথায় নিয়ে প্রাপ্যটি বুঝে পেতে চাই। নেতার গুণে নয়, সুনির্দিষ্ট নীতির ভিত্তিতে প্রাপ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সেটা দারিদ্র্য বিবেচনায় হতে পারে, আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় হতে পারে, জনসংখ্যা বিবেচনায় হতে পারে, তবে কোন অবস্থায় ব্যক্তি প্রাধান্য পেতে পারে না।
বাংলাদেশে ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটারে ১৬ কোটি লোকের বাস। এখন দেশে মৃত্যুহার প্রতি হাজারে সাড়ে ৯ জন এবং জন্মহার প্রতি হাজারে ২৫ জন। মৃত্যুহারের তুলনায় জন্মহার বেশি হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। জনসংখ্যার চাপে দেশ এখনই ন্যুব্জ। তার ওপর বর্তমান জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি শিশু ও কিশোর। বৃদ্ধ ও যুব মানুষের তুলনায় শিশু কিশোরের সংখ্যা বেশি হলে আগামীতে জনসংখ্যার চাপ আরও বাড়বে। এ অবস্থায় জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করে বিদেশে রপ্তানি করে রক্ষা পাওয়া যাবে না। স্বাধীনতার ৪০ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ১৬ কোটি লোকের মাত্র ১ কোটি মানুষ বিদেশে শ্রম বিক্রি করার সুযোগ পেয়েছে। বাকিদের দেশেই বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে হচ্ছে। সরকার যত ভালো জনশক্তি তৈরি করুক না কেন একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের বাইরে তা রপ্তানি করতে পারবে না। তাই জনশক্তি রপ্তানির ভরসায় জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণহীন করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সরকার জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রমে ভাটা দেয়ার সাধারণ মানুষের দারিদ্র্য বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। বস্তির সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষা করা যাচ্ছে না। মৌলিক অধিকার সোনার হরিণ হয়ে পড়েছে। কর্মসংস্থান না হওয়ায় বেকার সমস্যা বাড়ছে। এমন হাজার সমস্যার মধ্যে দেশের সব পরিকল্পনা ভুল হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশকে রক্ষা করতে হলে, মানুষকে রক্ষা করতে হলে জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। সরকারের সামনে এক নম্বর চ্যালেঞ্জ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। এই কার্যক্রমের শতভাগ সাফল্যের জন্য বাজেট বরাদ্দ থাকা জরুরি।
সমাজ এখন ধনবৈষম্যের নিরিখে পুরোপুরি বিভক্ত। ধনীর অর্থে যে দারিদ্র্য সৃষ্টির প্রধানতম হাতিয়ার তা ধনবাজরা বুঝতে চায় না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, 'আমাদের ভদ্র সমাজ আরামে আছে, কেননা আমাদের লোক সাধারণ নিজেকে বোঝে নাই। এই জন্যই জমিদার তাহাদিগকে মারিতেছে, মহাজন তাহাদিগকে ধরিতেছে, মনিব তাহাদিগকে গালি দিতেছে, পুলিশ তাহাদিগকে শুষিতেছে, গুরু ঠাকুর তাহাদের গাঁট কাটিতেছে, আর তাহারা কেবল সেই অদৃষ্টের নামে নালিশ করিতেছে যাহার নামে সমন জারি করিবার জো নাই। আমরা বড়জোর ধর্মের দোহাই দিয়া জমিদারকে বলি তোমার কর্তব্য করো, মহাজনকে বলি তোমার সুদ কমাও, পুলিশকে বলি তুমি অন্যায় করিয়ো না_ এমন করিয়া নিতান্ত দুর্বলভাবে কতদিন কতদিক ঠেকাইব। চালুনিতে করিয়া জল আনাইব আর বাহককে বলিব যতটা পারো তোমার হাত দিয়া ছিদ্র সামলাও_ সে হয় না; তাহাতে কোন এক সময়ে এক মুহূর্তের কাজ চলে কিন্তু চিরকালের এ ব্যবস্থা নয়। সমাজে দয়ার চেয়ে দায়ের জোর বেশি।'
সমাজের দায় নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন প্রাথমিক শিক্ষা। দেশের মানুষের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা গেলে একটা যোগাযোগের মাধ্যমে গড়ে উঠবে। যা তাকে দেশকে জানতে আগ্রহী করে তুলবে। মানুষ দেশকে জানলেই অন্তরে শক্তি সৃষ্টি হবে। দেশকে ভালোবাসতে শিখবে। একজন সাধারণ মানুষ অন্যের কথা শুনবে এবং অন্যকে নিজের কথা বলে নিজেদের অধিকারের গ-ির বিস্তার ঘটাবে। স্বাধীনতার ৪০ বছরে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার প্রয়োজনীয় প্রসার ঘটেনি। তাই মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে পেঁৗছানোর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। সাধারণ মানুষকে অধিকারসচেতন করতে পারলেই উন্নয়নকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
বর্তমান সমাজে শিক্ষা এখন অধিকার নয়, বাণিজ্যিক পণ্য। নানা ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশ কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। গুণগত মানের নৈতিক ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর প্রাথমিক একধারার শিক্ষা নিশ্চিত করেই দেশের ইতিবাচক পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোকে প্রীতির বন্ধনে বাঁধতে জাতীয় বাজেটে শিক্ষাব্যবস্থার প্রথম সোপান প্রাথমিক শিক্ষা গুরুত্ব পাবে। আগামীর জন্য জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সবাইকে লিখতে-পড়তে পারার মতো প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দ রাখার আবেদন জানাই। সঙ্গে সঙ্গে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বৃত্তিমুখী শিক্ষার বিস্তার ঘটানোর উদ্যোগ প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে সরকারের দায়িত্ব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৪০ বছরে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে একজন ডাক্তারের বিপরীতে দশমিক ৫৪ জন নার্স এবং দশমিক ২৭ জন স্বাস্থ্য সহকারীর ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন ডাক্তারের বিপরীতে ৩ জন নার্স ও ৫ জন স্বাস্থ্য সহকারীর একটি দলের প্রয়োজন পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের সার্বিক চিকিৎসার কথা না বলে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা কি সম্ভব? স্বাস্থ্যসেবার অব্যবস্থার কারণে সাধারণ রোগের চিকিৎসায় প্রতিবছর ব্যাপকসংখ্যক লোকজন বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে এবং এতে বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার কারণে দেশের অধিকাংশ মানুষই এখনো নূ্যনতম স্বাস্থ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশে এখন প্রায় ৮৫ শতাংশ মায়েরা সন্তান প্রসবকালে হাসপাতালে আসে না, ৭০ শতাংশ গর্ভবতী মেয়েরা রক্তশূন্যতায় ভুগছে, ৬০ শতাংশ শিশু জন্মকালে কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। দেশের আগামী প্রজন্মের চিত্র যদি এমন করুণ হয় তবে উন্নয়নের চিত্রটা কী হতে পারে তা বিবেচনার দাবি রাখে। সরকার স্বাস্থ্যনীতির খসড়া তৈরি করলেও গড়িমসির কারণে আজও চূড়ান্ত করতে পারেনি।
তাই জনগণের মতামতের ভিত্তিতে খসড়াকৃত স্বাস্থ্যনীতি অবিলম্বে চূড়ান্ত করে সে ভিত্তিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে। এই বাজেটে প্রয়োজনীয় নার্স ও স্বাস্থ্য সহকারীর সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
মানুষের উদ্দেশ্যহীন যাত্রা কোনদিন লক্ষ্যে পেঁৗছতে সাহায্য করে না। দেশও তাই। লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে চললে সাফল্য একদিন আসবে। বাংলাদেশের লক্ষ্যহীন যাত্রা তাকে রসাতলের দিকে নিয়ে চলেছে। আমরা আশু সমস্যার আশু সমাধানের পথে চলতে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোন ভাবনা আমাদের মধ্যে নেই। সরকার পাঁচসালা বা দশসালা পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলার কথা ভুলেই গেছে। বর্তমান সরকার জনগণের সামনে ভিশন-২০২১ রেখেছে। এই ভিশন অর্জনের কোন সুষ্ঠু পরিকল্পনা জনগণ পেয়েছে বলে মনে হয় না। তাই লক্ষ্য অর্জনে জনগণের যে পরিমাণ সম্পৃক্ততার প্রয়োজন তা লক্ষ করা যাচ্ছে না। জনগণের হার্দিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে কি লক্ষ্যে পেঁৗছানো সম্ভব হবে? তার ওপর এই ভিশন একটা দলের। এটাকে দেশের বা জনগণের ভিশনে রূপান্তর করা যায়নি। ফলে সরকার পরিবর্তন হলে এই ভিশনের অবস্থা কী হবে, তা আমাদের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলেই অনুমান করতে পারি।
তাই সব জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেই দেশের লক্ষ্য নির্ধারণ করার উদ্যোগ প্রয়োজন। তারপর লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার এগিয়ে চলবে। এমন মহা পরিকল্পনা ছাড়া উন্নয়নকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া সম্ভব নয়। আবার সরকার পাঁচসালা বা দশসালা পরিকল্পনা করেই তাদের উদ্দেশ্যহীন যাত্রাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা জরুরি। এতে পথের ভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু লক্ষ্যচ্যুতির কোন সুযোগ থাকবে না। সাধারণ মানুষ জানতে ও বুঝতে পারবে, আগামী ২০ বছর বা ৫০ বছর পর তাদের অবস্থান কোথায় থাকবে। বিশ্বে তাদের মূল্যায়ন কেমন হবে।
অতীতের ধারাবাহিকতায় আমরা দেখে থাকি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এডিপি'র ৪০-৪৫ শতাংশ সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। বাকি অংশ মাত্র ৩ মাসে তড়িঘড়ি বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। এ ভিন্ন এডিপি'র অর্থ ব্যয় করা সম্ভব হয় না। এর ফলে রাষ্ট্রীয় অর্থের ব্যাপক অংশ দুর্নীতির কবলে পড়ে। এডিপি দ্রুত বাস্তবায়নের নামে তড়িঘড়ি করে খরচ দেখিয়ে জাতির কি উপকার হয়? সংশ্লিষ্ট কিছু লোককে জনগণের অর্থের দেদার লুটের সুযোগ সৃষ্টি ছাড়া ভিন্ন কোন উপকার হয় বলে বিশ্বাস করা কঠিন। তাই ১. বাজেট প্রক্রিয়া ঢেলে সাজাতে হবে। ২. বাজেটে সব শ্রেণীর মানুষের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। ৩. শিক্ষার মান উন্নয়নকল্পে প্রাথমিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। ৪. স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করে প্রাথমিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। ৫. পিছিয়ে পড়া মানুষের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। সর্বোপরি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

No comments:

Post a Comment