Tuesday, January 18, 2011

সৌদি খেজুরের অর্থকরী ও পরিবেশগত দিক

মাদের দেশে যে খেজুর দেখা যায় তা বুনো বা পাতি খেজুর। বুনো খেজুরের বীজ থেকে সহজেই চারা গজায়। খোরমা খেজুরের বীজ থেকে সহজে চারা গজায় না বলে আমাদের দেশে খোরমা খেজুরের বিস্তৃৃতি হয়নি এবং খেজুর চাষ যে বহুমুখী অর্থকরী ফসল তা কখনো কেউ বিবেচনায় আনেনি।

সকলের একটি বদ্ধমূল ধারনা খেজুর মরুর দেশের ফসল। আসলে ধারনাটি সত্যি নয়, খেজুর উষ্ণ মণ্ডলীয় ফল এবং মরুর দেশের চাইতে আমাদের দেশে খেজুরের ফলন অধিক হবে পাশাপাশি ফলের মান হবে উন্নত। আর এর পেছনের কারণ হিসেবে কাজ করছে পানির প্রাপ্যতা। খেজুরই একমাত্র ফল যা স্বাভাবিকভাবে ৩ থেকে ৪ বছর সংরক্ষণ করা যায় আর তাই বিকল্প খাদ্য হিসেবে খেজুরের গুরুত্ব্ব অপরিসীম। চিনি: খেজুর ফলে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ চিনি থাকে তাই খেজুর পরিশোধন করে চিনি উৎপাদন করা যায়। রস: নারী-পুরুষ উভয় প্রকার খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ করা যায়, যা থেকে সহজেই বিভিন্ন দ্রব্যাদি প্রস্তুত করা যায়- ক) রাব; খ) গুড়; গ) চিনি; ঘ) ডরহব; ঙ) অষপড়যড়ষ; চ) অপবঃরপ ধপরফ বা ভিনেগার (প্রাকৃতিক)। কাগজ: খেজুর গাছের পাতা বিভিন্ন প্রকার মণ্ড ও কাগজ তৈরির এক উত্তম উপকরণ। কারণ এতে রয়েছে উচ্চ মাত্রার আলফা সেলুলোস (৫০-৫০%) ও হেমিমেলুলোস (২৬-৩০%)। অাঁশের দৈর্ঘ্য ১.২৫ মিঃ থেকে ২.৫ মি. মি. পর্যন্ত হয়। তাই খেজুর পাতা দিয়ে কাগজ তৈরিতে কোনো প্রকার সিন্থেটিক পলিমার যোগ করার প্রয়োজন হয় না। এই কাগজ ১০০ ভাগ পরিবেশবান্ধব। মাটিক্ষয় রোধ: খেজুর গাছের রয়েছে প্রকাণ্ড মূলতন্ত্র যা সোজা ও আড়াআড়িভাবে প্রায় ৫০ ফুট এবং মাটির গভীরে যায় ৭০ ফুট। পাশাপাশি অনেক খেজুর গাছ থাকলে সেগুলোর মূল মাটির গভীরে পরস্পর আড়াআড়িভাবে এক ধরনের জাল সৃষ্টি করে যা মাটি ধরে রাখতে সহায়তা করে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধ: বিশাল ও মজবুত মূলতন্ত্রের কারণে খেজুর গাছ তীব্র ঝড় প্রতিরোধ করতে পারে। ঝড়ের তীব্রতা কমাতে উপকূলীয় এলাকায় খেজুরের বনাঞ্চল সৃষ্টি করে সিডোর আইলা ইত্যাদির মত ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা অনেক কমিয়ে দেয়। সমপ্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ফ্লোরিডার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঘূর্ণিঝড় হারকেন এন্ড্রিউ। সেখানে তীব্র ঝড়ের পর যে ক'টি গাছ দাঁড়িয়েছিল তার প্রায় সবগুলোই ছিল পাম জাতীয় গাছ এবং তার অন্যতম ছিল খেজুর গাছ। মরুকরণ প্রতিরোধ: অন্য যেকোনো গাছের তুলনায় খেজুর গাছ মাটির গভীর থেকে অধিক পরিমাণে পানি শোষণ করে উপরে তুলে আনে বলে পানির স্তর নিচে নামতে পারে না।

No comments:

Post a Comment